মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৮, ০৭:৪৫:৪৫

দেওয়ালিতে ফেরা হল না, ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্রে হারিয়ে গেলেন পাইলট

দেওয়ালিতে ফেরা হল না, ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্রে হারিয়ে গেলেন পাইলট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ছ’ হাজার ঘণ্টা বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা। কয়েকদিন পরই ছুটিতে দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দেওয়ালিতে আর দিল্লির বাড়িতে আসা হল না ৩১ বছরের ভাব্যে সুনেজার। কারণ সোমবার ইন্দোনেশিয়ায় ১৮৯ জনকে নিয়ে যে বোয়িং বিমানটি ভেঙে পড়েছে, তার চালক ছিলেন এই ভারতীয়ই।

লায়ন এয়ার বিমান সংস্থার ফ্লাইট জেটি ৬১০ সোমবার সকালে জাভা দ্বীপের কাছে আচমকাই সমুদ্রের মধ্যে ভেঙে পড়ে। সমুদ্রের প্রায় তিরিশ থেকে পয়ত্রিশ ফুট গভীরে চলে যায় বিমানটি। সেই বিমানের পাইলট ছিলেন সুনেজা। ইতিমধ্যে সুনেজার মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করে গভীর শোক প্রকাশ করেছে ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস। 

লায়ন এয়ার নামে যে সংস্থার বিমানটি সমু্দ্রে ভেঙে পড়ে, সেই বিমানসংস্থায় ২০১১ সাল থেকে কর্মরত ছিলেন সুনেজা। ৬ হাজার ঘণ্টা আকাশে ওড়ার অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। সুনেজার সঙ্গে সহকারী পাইলটের দায়িত্বে থাকা ইন্দোনেশিয়ার কো-পাইলট হারভিনোর পাঁচ হাজার ঘণ্টা বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা ছিল বলে দাবি করেছে লায়ন এয়ার।

দিল্লির বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে জাকার্তাতেই থাকতেন সুনেজা। লায়ন এয়ারে যোগ দেওয়ার আগে এমিরেটস সংস্থায় ট্রেইনি পাইলট ছিলেন তিনি।

সামনেই দেওয়ালি। ছুটিতে তাই বাড়িতে আসার কথা ছিল সুনেজার। পরিবার এবং বন্ধুদের দেওয়ালিতে পার্টির আয়োজন করার জন্যও বলেছিলেন। কিন্তু সেসব পরিকল্পনা জাভা সাগরের জলে চিরতরে হারিয়ে গেল।

সোমবার সকালে জাকার্তা থেকে আকাশে ওড়ার তেরো মিনিটের মধ্যেই আচমকা ভেঙে পড়ে অভিশপ্ত বিমানটি। বোয়িং সংস্থার ওই বিমানটি অগস্ট মাসে হাতে পেয়েছিল বিমানসংস্থা। আকাশে উড়েছিল মাত্র আটশো ঘণ্টা। সেই বিমান কীভাবে এমন দুর্ঘটনার কবলে পড়ল, তা জানার জন্য ব্ল্যাক বক্স এবং ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডারের খোঁজ করছেন উদ্ধারকারীরা। 

একটি আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থার খবর অনুযায়ী, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে বিমানবন্দরে ফিরে আসতে চেয়েছিল দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি। কিন্তু সেই সুযোগ হয়তো পাননি সুনেজা এবং তাঁর সহকারী চালক।

লায়ন এয়ারের এক কর্তা জানিয়েছেন, আগের দিন বালি থেকে জাকার্তা ফেরার পরে বিমানটিতে একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি ধরা পড়ে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়াররা তা সারিয়ে সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পরেই আকাশে উড়েছিল বোয়িং বিমানটি। ফলে কী কারণে এই বিপর্যয়, সেই ধোঁয়াশা কিছুতেই কাটছে না।

এ দিকে তিনশো উদ্ধারকারী মিলে চেষ্টা চালালেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কারও দেহই উদ্ধার করা যায়নি। শুধুমাত্র কিছু পরিচয়পত্র, যাত্রীদের জিনিসপত্র এবং বিমানের ধ্বংসস্তূপেরই খোঁজ মিলেছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে