আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২৪ ডিসেম্বর যখন সাজদা নাসেরকে এসে চিকিৎসক বলেছিলেন, 'এই দেখো, তোমার মেয়ে। খুশি তো?', তখন পোশাক দেখে হা'ম'লাকারীদের চি'হ্নি'ত করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির মন্তব্যে ভারতের এক অংশ উ'ত্তা'ল। '
সে দিনই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি ও নয়া নাগরিকত্ব আইনের বি'ত'র্কের মধ্যেই জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর) পরিমার্জন খাতে ৩৯৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল মোদির মন্ত্রিসভা। সে দিনই আবার কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মঞ্চে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিলিপি ছিঁ'ড়ে প্র'তিবা'দ করেছিলেন এক ছাত্রী।
কিন্তু উ'ত্তা'ল এই সময় কলকাতার সাজদা নাসেরকে স্পর্শ করতে পারেনি। সাজদা বলছিলেন, 'যখন চিকিৎসক মেয়েকে দেখালেন, সে সময়ের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। যারা মা হয়েছেন, তারাই এই অনুভূতিটা বোঝেন।'
কিন্তু 'নতুন ভারত', যেখানে পোশাক-ধর্ম দেখে মানুষ কেমন তা চি'হ্নি'ত করা হচ্ছে, সেখানে মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা হচ্ছে না? মেয়ের বয়স মাত্র আট দিন। এর মধ্যেই সাজদার দৈনন্দিন রুটিনে আমূল পরিবর্তন এসেছে। মেয়েকে নিয়ে সারা ক্ষণ ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাঁকে।
সেই ব্যস্ততার মধ্যেই সাজদা স্পষ্ট বললেন, 'কেন চিন্তা হবে? এখন যা হচ্ছে সব সাময়িক। এটা চলতে পারে না। দেশের ভিত এত আলগা নয় যে রাতারাতি পাল্টে যাবে।' সাজদাকে সমর্থন করলেন তার স্বামী জিশান আহমেদ।
জিশানের কথায়, 'হঠাৎ করেই একদল লোক বিভাজন তৈরির চেষ্টা করল, সেটা তো হতে পারে না। আমরা সবাই সমান। মনে হয় না আমাদের মেয়েকে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। ও যখন বড় হবে, তখন চিরকালীন ভারতবর্ষের হাত ধরেই বড় হবে। এই বিশ্বাস আমাদের রয়েছে।'
যে দিন সন্তানসম্ভবা হন, তখন থেকেই একটা ঘোরের মধ্যে দিয়ে দিন কাটিয়েছেন বলে জানালেন সাজদা। তার কথায়, 'ছেলে হবে নাকি মেয়ে, আমরা ভাবিইনি। চেয়েছিলাম সন্তান সুস্থ হোক।' সাজদার অস্ত্রো'প'চার করেছিলেন চিকিৎসক পলি চট্টোপাধ্যায়।
তিনি বলছিলেন, 'আমাদের কাছে সকলেই সমান। কিছু লোক কেন বিভা'জনের চেষ্টা করছে কিছুতেই বুঝতে পারছি না। কার পদবি কী, কার নাম কী, সেটা দেখে কোনও চিকিৎসকই চিকিৎসা করেন না। সাজদার মেয়ে ও সাজদা, দু'জনেই সুস্থ রয়েছে এতেই আমি খুশি।
সাজদা, জিশান বলছিলেন, 'এখনও মেয়ের নাম ঠিক করতে পারিনি। শুধু জানি আমার মেয়ে এ দেশের মেয়ে, ভারতের মেয়ে!' সূত্র : এবিপি