সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৭:৫০:৪৮

অত্যাধুনিক হাসপাতাল থেকে ইসলামি গবেষণা কেন্দ্র, সৌরশক্তিতে চলবে অযোধ্যার নতুন মসজিদ!

অত্যাধুনিক হাসপাতাল থেকে ইসলামি গবেষণা কেন্দ্র, সৌরশক্তিতে চলবে অযোধ্যার নতুন মসজিদ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, গ্রন্থাগার এবং কমিউনিটি কিচেন, এই সব সুবিধাকে এক জায়গা নিয়ে তৈরি হতে চলেছে অযোধ্যার বহুচর্চিত মসজিদ। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তার ব্লু প্রিন্ট। অযোধ্যা মামলার রায় ২০১৯ সালেই দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর অতিমারির মধ্যেই নতুন সাজে সেজে উঠেছে রাম জন্মভূমি। 

মহাসমারোহে স্থাপিত হয়েছে রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ওই বিতর্কিত জমিতে রামমন্দির নির্মিত হচ্ছে। পাশাপাশি অযোধ্যারই ধন্নীপুর গ্রামে ৫ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে মসজিদ নির্মাণের জন্য। মসজিদসহ সম্পূর্ণ কমপ্লেক্সের উপদেষ্টা এবং স্থপতির দায়িত্বে আছেন এস এম আখতার। 

সংগ্রহশালার কিউরেটরের দায়িত্বে থাকবেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক পুষ্পেশ পান্থ এবং মুম্বাইবাসী প্রখ্যাত সমাজসেবী মোহাম্মদ শোয়েব। কেমন হবে সেই মসজিদের স্থাপত্য? সেই প্রসঙ্গে এত দিন কোনও কিছু শোনা যায়নি। অবশেষে নীরবতা ভেঙেছে ইন্দো ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন বা আইআইসিএফ।

সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড দ্বারা গঠিত এই ফাউন্ডেশন সম্প্রতি মসজিদের নীল নকশা প্রকাশ করেছে। প্রাচীন রীতি ও ঐতিহ্য অনুসারে মসজিদের আকার হবে গোলাকার, বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে গম্বুজাকৃতি। তবে আলাদা করে মাথার উপর থাকবে না কোনও গম্বুজ বা ডোম। কিন্তু বাকি ক্ষেত্রে মসজিদ তৈরি হবে অত্যাধুনিক পাশ্চাত্য রীতি মেনেই।

শোনা যাচ্ছে, দোতলা এই ধর্মস্থানে কোনও মিনার থাকবে না। সম্পূর্ণ স্থাপত্য আলোকিত হবে সৌরশক্তিতে। গাড়ি পার্কিংসহ আধুনিক নাগরিক জীবনের সব সুযোগ সুবিধে সেখানে থাকবে। নির্মাণের পর নতুন মসজিদে একসঙ্গে ২ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারবেন। এ ছাড়াও থাকছে ট্রাস্ট অফিস, ইসলামি গবেষণা কেন্দ্র এবং প্রকাশনী সংস্থা। মূল লক্ষ্য থাকবে ইন্দো ইসলামিক সংস্কৃতি ও সাহিত্যের উপর।

মসজিদ চত্বরেই থাকবে অত্যাধুনিক পরিষেবাসহ হাসপাতাল। সেখানে চিকিৎসার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন সন্তানসম্ভবা এবং শিশুরা। গুরুত্ব দেওয়া হবে শিশুদের অপুষ্টিজনিত সমস্যা দূরীকরণে। মূল বাবরি মসজিদ আয়তনে যা ছিল, তার তুলনায় নতুন নির্মাণ ৪ গুণ বেশি বড় হবে। আবার নতুন মসজিদের তুলনায় হাসপাতাল ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধের আয়তনের পরিসর ৬ গুণ বেশি বড় হবে।

জানা গিয়েছে, ৫ একর জমির উপরে সাড়ে ৩ হাজার বর্গমিটার জায়গা জুড়ে তৈরি হবে নতুন মসজিদ। পাশাপাশি, হাসপাতাল ও অন্য পরিষেবার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ২৪,১৫০ বর্গমিটার জায়গা। সম্পূর্ণ স্থাপত্যটি সৌরশক্তিতে চালিত হবে বলে নতুন নির্মাণে আলাদা করে কোনও বিদ্যুৎ সংযোগ থাকবে না। পরিবেশ রক্ষার দিকে বিশেষ নজর দিয়ে তৈরি করা হবে সুদৃশ্য বাগান।

৫ একর জমিতে নবনির্মাণকে ঘিরে থাকা সেই উদ্যানে থাকবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গাছ। আমাজনের বৃষ্টিঅরণ্য থেকে দাবানলবিধ্বস্ত অস্ট্রেলিয়ার বন। সব জায়গা থেকে গাছপালা এনে পালন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে সেই উদ্যানে। এখনও অবধি যা পরিকল্পনা, নতুন মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে কোনও সমারোহ করা হবে না। 

প্রকল্পের জন্য অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিশদ বিবরণ এখনও জানা যায়নি। অর্থ সংগ্রহের জন্য দু'টি আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করা হয়েছে। একটি মসজিদের জন্য। অন্যটি পুরো প্রকল্পের জন্য। মসজিদের নামও চূড়ান্ত হয়নি। তবে এখনও অবধি জানা গিয়েছে, বাবর বা অন্য কোনও শাসকের নামে এর নামকরণ করা হবে না। আগামী বছর ২৬ জানুয়ারি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হবে। 

ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সে দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রথম দফায় তৈরি হবে মসজিদ। তার পর প্রকল্পের বাকি কাজে হাত দেওয়া হবে। সম্পূর্ণ নির্মাণটি শেষ হতে ২ বছর সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর কে স্থাপন করবেন? সে সম্পর্কেও জানা যায়নি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে