আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের স্বাধীনতার পর এই দেশে এক নারীর ফাঁসির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। মথুরার জেলে সেই মহিলার ফাঁসির জন্য প্রস্তুতি তুঙ্গে। দেশটির উত্তরপ্রদেশের একমাত্র ফাঁসির ঘরটি রয়েছে মথুরার জেলে। সেখানেই আমরোহার শবনম আলী নামে এক নারীর ফাঁসি হতে পারে।
নির্ভয়ার দোষীদের ফাঁসিতে ঝোলানো পবন জল্লাদ ইতোমধ্যে দুবার ফাঁসিকাঠের পরীক্ষা করেছেন। ভারতের সুপ্রিমকোর্টে এ ফাঁসির সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ হয়েছে। শবনমের ফাঁসির মওকুফের আবেদন গিয়েছিল দেশটির রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে। অপরাধের নৃশংসতার বিচার করে তিনিও ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন।
শবনমের ফাঁসি এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। মথুরা জেলে নারীদের ফাঁসিঘরে শবনমকে ফাঁসি দেওয়া হবে। বহুদিন ধরে অব্যবহৃত সেই ঘর। এমনকী ফাঁসিকাঠের ব্যবহারও এর আগে কখনও হয়নি। তাই জেল কর্তৃপক্ষের চাপ বেড়েছে। ডেথ ওয়ারেন্ট জারি হলেই শবনম নামের সেই নারী অপরাধীর ফাঁসি হবে। তার আগে সমস্ত প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে জেল কর্তৃপক্ষ।
জেলার রাকেশ কুমার বর্মা জানিয়েছেন, ফাঁসির যাবতীয় প্রস্তুতি হয়ে গিয়েছে। মহিলাদের ফাঁসি দেওয়ার নিয়ম মোতাবেক শবনমকে মথুরা জেলা সংশোধনাগারে স্থানান্তরিত করার জন্য আমরোহা জেলা প্রশাসনকে আর্জি জানানো হয়েছে। ভারতের মধ্যে একমাত্র মথুরা জেলেই মহিলাদের ফাঁসি দেওয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে। আর সেই ফাঁসি দেবেন নির্ভয়া কাণ্ডের ফাঁসুড়ে পবন জল্লাদ। ইতিমধ্যে তিনি মথুরা জেলে ঘুরে এসেছেন। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন।
কী অপরাধে ফাঁসির মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে? ইংরেজি এবং ভূগোলে স্নাতকোত্তর করে গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াত শবনম। তারই মধ্যে সেলিমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাতে আপত্তি ছিল শবনমের পরিবার। ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে নিজের বাবা, মা, দুই ভাই, দুই ভাবী এবং ১০ মাসের ভাইপোকে খুন করেছিল।
প্রাথমিকভাবে শবনম দাবি করেছিল, অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। যদিও পরে স্বীকার করে, মাদকজাতীয় কোনও দ্রব্য মিশ্রিত দুধ খাইয়েছিল পরিবারের সদস্যদের। তারপর খুন করেছিল। ২০১০ সালে আমরোহার নিম্ন আদালত শবনম এবং সেলিমকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছিল। পরে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন করেছিল দু'জন। গত বছরের জানুয়ারিতে শবনমের রিভিউ পিটিশন খারিজ হয়ে গিয়েছিল।