আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিকম্পে অন্তত ১৩১ জন নিহত হয়েছে এবং উদ্ধার অভিযানও শেষ হতে যাচ্ছে। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করতে চলছে এবং আহতদের চিকিৎসা ও যারা তাদের বাড়িঘর হারিয়েছেন, তাদের সাহায্য করার দিকে মনোনিবেশ করবে।
৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প সোমবার রাতে গানসু প্রদেশের পাহাড়ী অঞ্চলে আঘাত হানে। এতে প্রায় এক হাজার মানুষ আহত এবং ১৩১ জন নিহত হয়েছে।
প্রচণ্ড ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় হাজার হাজার শ্রমিক উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার মাইনাস ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়েস তামাত্রায় তারা উদ্ধার অভিযান চালায় বলে চীনা সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
এদিকে গানসুর দক্ষিণে প্রতিবেশী কিংহাই প্রদেশে এখনও ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। গানসু প্রদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জিশিশান অঞ্চলের স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই এলাকার ৫ হাজারেরও বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভূমিকম্পে।
প্রদেশের আরো অনেক ভবন ভূমিধসের ফলে সৃষ্ট কাদায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং রাস্তাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা বলেছেন, ভূমিকম্পের কম্পন খুব তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছে। তারা দ্রুত বাড়ি-ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে আসে।
একজন বলেছেন, ‘আমি আমার পরিবারকে ঘুম থেকে তুলে এক নিঃশ্বাসে ১৬ তলা থেকে নিচে নেমেছি।’ চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং হাজার হাজার দমকল কর্মী, সৈন্য ও পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি চিকিৎসক কর্মীদের এই অঞ্চলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
গানসু তিব্বত এবং লোয়েস মালভূমির মধ্যে অবস্থিত এবং মঙ্গোলিয়ার সীমানা। প্রত্যন্ত অঞ্চলটি চীনের অন্যতম দরিদ্র এবং জাতিগতভাবে বৈচিত্র্যময় অঞ্চল। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল লিনজিয়া হুই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে।
যেখানে হুই, বোনান, ডংজিয়াং এবং সালার জনগণসহ অনেক চীনা মুসলিম গোষ্ঠীর বাসস্থান ছিল। চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.২। তবে ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) বলছে ৫.৯। গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল)। প্রাথমিক ভূমিকম্পের পর বেশ কয়েকটি ছোট আফটারশক হয়েছিল।
চীন এমন একটি অঞ্চলে অবস্থিত যেখানে বেশ কয়েকটি টেকটোনিক প্লেট, বিশেষ করে ইউরেশিয়ান, ভারতীয় এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে। তাই চীন ভূমিকম্প বেশ ভূমিকম্পপ্রবণ। সূত্র: বিবিসি