আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তখন সময় সকাল ৭টা ৪৭ মিনিট। পোখরা বিমানবন্দর থেকে দুই শিশু-সহ ২০ জন যাত্রী এবং তিন বিমানকর্মীকে নিয়ে জমসমের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে এয়ারের ছোট বিমানটি। মাত্র কুড়ি মিনিটের সফর। কিন্তু ওড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে হারিয়ে যায় বিমানটি।
প্রাথমিক ভাবে খোঁজ না মিললেও প্রায় চার ঘণ্টা তল্লাশির পরে নেপালের ম্যাগদি জেলায় সলিঘোপ্তে জঙ্গলে খোজ পাওয়া গিয়েছে ওই বিমানের ধ্বংসস্তূপ। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল যাত্রীদের ক্ষতবিক্ষত দেহ। ভেঙে পড়ার পরে বিমানটিতে আগুন লেগে যায় বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। প্রথমে কাঠমান্ডু থেকে সেই এয়ারেরই তিনটি হেলিকপ্টার তল্লাশি অভিযানে নামে। পরে যোগ দেয় নেপাল সেনা এবং পুলিশ সদস্যরা।
পোখরা থেকে অন্নপূর্ণা শৃঙ্গ অভিযান শুরু করেন পর্বতারোহীরা। এ দিন ওই বিমানটিতে তিন বিমানকর্মী ছাড়া ছিলেন দুই শিশু এবং নেপালের ১৮ জন নাগরিক, এক জন চীনা, আর এক জন কুয়েতের নাগরিক। এই ঘটনায় সবাই নিহত হয়েছেন। একেবারে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে বিমানটিও।
এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে ভীমরাজ রাই জানিয়েছেন, ‘বুধবার আবহাওয়া ঠিকঠাই ছিল। কি ভাবে বিমান ভেঙে পড়ল আমরা বুঝতে পারছি না।’ বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটির দিকেও আঙুল তোলা যাচ্ছে না। কারণ বিমানচালক রোশন মানান্ধর পোখরা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে শেষ বারের মতো জানান, ‘বিমান একদম ঠিক আছে। সি ইউ ব্যাক। গুড ডে।’
তাহলে বিমানটি ভেঙে পড়ল কি ভাবে? নেপালের বিমান পরিবহণ মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তাদের দাবি, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে হবে। বিমান যেখানে ভেঙে পড়েছে তার আশপাশের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের মতো শব্দ শুনেছেন তারা। তার পরে দেখা গিয়েছে আগুনের শিখা। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, দেখা না যাওয়ার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কারণ সোমবার রাত থেকে অন্নপূর্ণা শৃঙ্গের সাউথে বেসে ভূমি ধসের কারণে ধুলায় আকাশে মেঘ তৈরি হয়েছিল। তাতে চার পাশের আবহাওয়া খারাপ হতেই পারে।
নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার থেকেই ম্যাগদি জেলায় বিমানের ধ্বংসস্তূপের আশপাশে অন্তত সাতটি গ্রাম ধুলার আবাহাওয়া অত্যান্ত খারাপ ছিল। ১৯৪৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিমান এবং হেলিকপ্টার মিলিয়ে প্রায় ৭০টিরও বেশি দুর্ঘটনার সাক্ষী এই দেশটি। যাতে প্রাণ হারিয়েছেন সাতশোরও বেশি মানুষ।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই