চাঁদপুর: মামলায় হাজিরা দিতে আদালতপাড়ায় মিলন। অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার। এই নিয়ে ‘মিলন আটক মিলন নাটক’ আজ রবিবার দিনভর এমনটা ছিল 'টক অব দি চাঁদপুর'। শেষপর্যন্ত সবই ছিল গুজব। তবে তাঁর সহধর্মিনী স্বামীর নিরাপত্তা চেয়ে নির্বাচন কমিশনে গেছেন, এমন তথ্যের সত্যতা মিলেছে।
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহসানুল হক মিলনের সহধর্মিনী স্বামীর নিরাপত্তা চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন। কারণ, মিলন প্রায় তিন ডজন মামলার ফেরারি। তাই রবিবার বিকেলে নাজমুন নাহার বেবী তাঁর স্বামী মিলন যেন চাঁদপুরের আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিন পেয়ে নিরাপদে থাকতে পারেন এই বিষয় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে নাজমুন নাহার বেবী- প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার কাছে আবেদন নিয়ে যান। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাক্ষাৎ না পেয়ে বেবী, নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম ও মোসাম্মৎ কবিতা খানমের কাছে আবেদনপত্রটি পৌঁছে দেন।
এই আবেদনপত্রে লেখা ছিল, মিলন দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রায় তিন ডজন মামলায় হাজিরা দিতে ব্যর্থ হন তিনি। তবে গত কিছুদিন আগে দেশে ফিরে এলেও নানা বাধার কারণে চাঁদপুরে গিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে পারেননি মিলন। এই বিষয় মিলন চিঠিতে উল্লেখ করেন, চাঁদপুরের আদালতে হাজিরা দিতে গেলেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে নতুন মামলায় জড়াবে এবং রিমান্ডে নিয়ে তাঁর ওপর নির্যাতন চালাবে। তাই বর্তমান সময় যেহেতু পুলিশসহ প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীন। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনই কেবল তাকে নিরাপত্তা দিতে পারে।
এদিকে, আজ রবিবার দিনভর চাঁদপুরের আদালতপাড়া পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক সাদা পোশাকের পুলিশের উপস্থিতি ছিল। এই নিয়ে জেলা পুলিশের কোনো কর্মকর্তা সরাসরি মুখ না খুললেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বিশেষ প্রয়োজনে আদালতপাড়ার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আর বাড়তি পুলিশের উপস্থিতি এবং মিলন আটক মিলন নাটক দেখতে চাঁদপুরের আদালতপাড়ার প্রতি ছিল সবার চোখ। বিষয়টি শেষপর্যন্ত টক অব দি চাঁদপুরে পরিণত হয়।
অন্যদিকে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহসানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে তাঁর নির্বাচনী এলাকা কচুয়ায় নানা অপরাধের অভিযোগ এনে অন্তত ৩৫টি মামলা চলমান রয়েছে। এসব মামলার বেশ কয়েকটিতে মিলন জামিন নিয়ে থাকলেও দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে এখন গ্রেপ্তারের পরোয়ানা জারি রয়েছে।