প্রতিনিধি, চাঁদপুর: প্রায় ৫ বছর বিদেশে পালিয়ে থাকা ১৭ মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি বিএনপির সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরের পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
আজ শুক্রবার দুপুরে মিলনকে চাঁদপুরের আদালতে হাজির করা হবে। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির।
মিলনকে চট্টগ্রামের চকবাজার থানার চটেশ্বরী এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৩ নভেম্বর থেকে ওই বাসাতেই ছিলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর মিলনকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জানা যায়, চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসন থেকে বিএনপির হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে এ মাসের মাঝামাঝি সময় বিদেশ থেকে দেশে আসেন মিলন। দেশে এসে মিলনের চাঁদপুরের আদালতে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও, হাজির হননি তিনি। গত এক সপ্তাহ ধরে মিলনের সঙ্গে পুলিশের চোর পুলিশ খেলা শুরু হয়।
এক সপ্তাহ ধরে মিলনের সঙ্গে পুলিশের চোর পুলিশ খেলা শুরু হয়। মিলনকে গ্রেপ্তারে ৬ দিন ধরে চাঁদপুরের আদালত চত্বরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গতকাল সকাল থেকেও চাঁদপুর সদর পুলিশ সুপার (সার্কেল) জাহেদ পারভেজের নেতৃত্বে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের কয়েকটি দল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা জজ আদালতের প্রতিটি প্রবেশ মুখ ঘিরে রাখে। তাই গ্রেপ্তার আতঙ্কে গত ৬ দিনেও আদালতে আসেননি মিলন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চাঁদপুর পুলিশ ও ডিবি পুলিশের কয়েকটি দল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা জজ আদালতের প্রত্যেকটি প্রবেশ মুখ ঘিরে রাখে। ছবি: আলম পলাশ
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চাঁদপুর পুলিশ ও ডিবি পুলিশের কয়েকটি দল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা জজ আদালতের প্রত্যেকটি প্রবেশ মুখ ঘিরে রাখে। ছবি: আলম পলাশ
মিলনের আইনজীবী কামরুল ইসলাম বলেন, এভাবে আদালতের চতুরদিকে পুলিশ প্রহরা থাকলে মিলন কেন, কোনো আসামিই আদালতে ভয়ে ঢুকতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে জাহেদ পারভেজ বলেন, ‘আমরা মিলনের জন্য কোনো নিরাপত্তাবলয় তৈরি করিনি। আসন্ন সংসদ নির্বাচন ঘিরে সরকারি প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’
মিলনকে ধরতে গত ৬ দিন ধরে চাঁদপুরের আদালত চত্বরে ব্যাপক পুলিশি তৎপরতা। ছবি: আলম পলাশ
মিলনকে ধরতে গত ৬ দিন ধরে চাঁদপুরের আদালত চত্বরে ব্যাপক পুলিশি তৎপরতা। ছবি: আলম পলাশ
মিলনের স্ত্রী নাজমুননাহার বেবির ভাষ্য, ‘মিলনসহ কচুয়ার বিএনপির শত শত নেতা-কর্মী আদালতে গ্রেপ্তারের ভয়ে হাজির হতে পারছিলেন না। আমরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিতভাবে নির্বাচনের আগে এই হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছিলাম।’ কিন্তু কেউ এর সহযোগিতা করেননি বলে দাবি বেবির।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সাল থেকে মিলন ও তাঁর স্ত্রী নাজমুননাহার বেবিসহ কচুয়ার শত শত বিএনপি নেতা-কর্মীকে আওয়ামী লীগ সাংসদ মহীউদ্দীন খান আলমগীরের লোকজন ও নেতা-কর্মী বিভিন্ন মামলা ও হামলা দিয়ে কচুয়াছাড়া করে রেখেছেন। আদালতে মিলনের বিরুদ্ধে হত্যা, চুরি, ছিনতাই, লুটপাট ও ভাঙচুরের ২৫টি মামলা রয়েছে।-প্রথম আলো