নিউজ ডেস্ক : দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিশাল জমিদার বাড়ি। রঙ আর কারুকাজে চোখ ধাঁধানো। মফস্বল শহরে হঠাৎ এমন বিলাশবহুল বহুতল ভবন দেখে পথচারীদের চোখ তো চড়ক গাছ। কিন্তু অচিরেই ভুল ভেঙে যায় তাদের।
না, এটা কোনো জমিদার বাড়ি কিংবা বিলাশবহুল ভবন নয়। বিয়ে বাড়ির গেট। তাও আবার হঠাৎ ধনী হয়ে ওঠা এক তেল ব্যবসায়ীর (কলু) ছেলের বিয়ে।
অনেকেই মুগ্ধ হয়ে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকে। কেউ আবার সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। ভেজাল তেল বিক্রির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কয়েক দফায় জরিমান গুনতে হয়ে ওই ব্যবসায়ীর। তারই ছেলের বিয়েতে ভিড় জমিয়েছেন এলাকার রাজনীতিক আর প্রভাবশালীরা।
শনিবার এমন দৃশ্য দেখা গেছে ফুলবাড়ী পৌর এলাকার উত্তর সুজাপুর গ্রামের তেল ব্যবসায়ী যুগলচন্দ্র দত্তের বাড়িতে। কোটি টাকা ব্যয়ে ছেলে সুমন দত্তের বিয়ে ও বৌভাতের আয়োজন করেছেন। এমন ব্যয়বহুল আয়োজন করে তেল ব্যবসায়ী যুগলচন্দ্র তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পৌরসহ উপজেলাবাসীকে।
স্থানীয়রা জানায়, গত ২৮ এপ্রিল যুগলচন্দ্র দত্তের ছেলে সুমন দত্তের সঙ্গে বিয়ে হয় রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার ডাংগাপাড়া গ্রামের শ্রী হেমন্ত সরকারের মেয়ে জয়ীতা সরকার ঐশির। বিয়েতে বরযাত্রী হিসেবে যান শহরের ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা।
বিয়ের দিন থেকেই যুগলচন্দ্র দত্তের বাড়িতে রাতদিন চলছে নানা উৎসব। আতশবাজির শব্দে প্রকম্পিত হচ্ছে পুরো উত্তর সুজাপুর এলাকা।
শনিবার শহরের রাবেয়া কমিউনিটি সেন্টারে বৌভাতের আয়োজন হয়। সেখানেও বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে। এমন আয়োজনে হতবাক হয়ে গেছেন ফুলবাড়ী পৌরবাসী।
ফুলবাড়ীর বিশিষ্ট স্বর্ণব্যবসায়ীরা বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে ১৯৯৫ সালে যুগলচন্দ্র তার জন্মভুমি সিরাজগঞ্জ ছেড়ে ফুলবাড়ীতে এসে বসতি স্থাপন করেন। সে সময় তিনি স্বর্ণের দোকানে দিন মজুরি করতেন। এক পর্যায়ে ফুলবাড়ী কাঁচা বাজার সংলগ্ন ফুটব্রিজের পশ্চিম পাশে একটি তেলের মিল স্থাপন করেন। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি হয়ে গেছেন কোটিপতি।
অভিযোগ রয়েছে, ভেজাল তেল বিক্রির দায়ে কয়েক দফায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের দণ্ড-জরিমানার শিকার হন যুগলচন্দ্র। আর সেই যুগলচন্দ্র কোটি টাকার মালিক হওয়ায় এখন তার সঙ্গে মিশে গেছেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা আর জনপ্রতিনিধিরা।
অনেকেরেই মন্তব্য, টাকা থাকলে কি-না হয়? আবার কেউ বলছেন, টাকা না থাকলে যখন কেউ চিনেই না, তাহলে তো তিনি ঠিকই করেছেন।
জানতে চাইলে যুগলচন্দ্র দত্ত সাংবাদিকদের বলেন, ‘সবাই আমাকে ভালোবাসে। তাই ছেলের বিয়েতে তাদের নেয়ার জন্যই বড় আয়োজন। আমার ছেলের বিয়ে ও বৌভাতের আয়োজনটি ফুলবাড়ীতে সেরা হবে বলে পরিকল্পনা করেছিলাম।-বাংলামেইল
১ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর