দিনাজপুর: আম আর লিচু বাগান করে রফিকুল ইসলাম এখন কোটিপতি। ব্যক্তি উদ্যোগে নিজের প্রচেষ্টায় এখন ৩২টি আম আর লিচু বাগানের গর্বিত মালিক তিনি। এলাকায় ব্যাপক হারে আম ও লিচু বাগান করায় তিনি আম-লিচু রফিকুল নামে পরিচিত। যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কোনাকোলা গ্রামের মৃত সামসুর রহমানের ছেলে রফিকুল ইসলাম গ্রামীণ ব্যাংকের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কৃষি ফাউন্ডেশনে চাকরি করার সুবাদে ১৯৯৩ সালে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে আসেন। ২০০৪ সালে চাকরি ছেড়ে আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রথমে নবাবগঞ্জ এলাকায় বর্গা জমিতে ধান চাষ শুরু করেন। ২০০৬ সালে নিজের ৯০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে তিন বছরের জন্য ব্যক্তিমালিকানাধীন আম ও লিচু বাগান ইজারা নিয়ে শুরু করেন বাগান ব্যবসা। ফল বিক্রি পর্যন্ত তার খরচ হয় আরো ৫০ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে ফল বিক্রি করে লাভ করেন আড়াই লাখ টাকা। ওই সাফল্যের পর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এগিয়ে চলেছেন বাগানের পরিধি বাড়াতে। বর্তমানে ১৬৫ বিঘা (২২ হেক্টর) জমির ওপর ছোট বড় ৩২টি আম ও লিচু বাগান রয়েছে।
এতে গাছের সংখ্যা সাত হাজার। সরজমিন রফিকুল ইসলামের ফুলবাড়ীর কৃষ্ণপুর, নবাবগঞ্জের রঘুনাথপুর, বামনগড়, হরিপুর, চামুন্ডা, বিরামপুরের ধানজুড়ি, বেলপুকুর, দারিয়া এলাকার আম ও লিচু বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ল্যাঙড়া, হিমসাগর, ফজলী, অম্রপলি, হাঁড়িভাঙা, লাফনা ও বারি-৪ জাতের গাছের ডালে থরে থরে আম ঝুলছে। লিচুর সময় শেষ হলেও তার বাগানে এখনও উন্নত জাতের বিশেষ করে মাদ্রাজী, বোম্বাই, চায়না-৩, চায়না-৪ ও বেদেনা জাতের লিচু শোভা পাচ্ছে। তিনি বলেন, ৪৮ জন ব্যক্তির বাগান ৫ থেকে ১৫ বছরের জন্য ইজারা নেয়া হয়েছে। এতে ইজারা খরচ পড়েছে ১২ লাখ টাকা। ৩২টি বাগানের ফল বিক্রি পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা।
কিন্তু ফল বিক্রি হবে অন্তত ৪০ লাখ টাকার। এতে তার যে লাভ হবে ওই টাকা দিয়ে আগামীতে আরো কয়েকটি বাগান ইজারা নেয়ার ইচ্ছা রয়েছে। বর্তমানে ৩২টি বাগানে ৪৮ জন নারী ও পুরুষ শ্রমিক কাজ করছেন। তবে যেসব জমিতে বাগান সৃজন করা হয়েছে, সেগুলোতে আগে কোনটি পরিত্যক্ত অথবা ইউক্যালিপটাস গাছের বাগান ছিল। তবে খুশির খবর হলো, তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেকেই এখন আম ও লিচু বাগান করার দিকে ঝুঁকে পড়ছেন।
২২ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ