ফরিদপুর থেকে : ফরিদপুরে সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক সাজিয়া বেগম ও সোনালী ব্যাংকের অডিট অফিসার ফারুক হাসান হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে জেলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে কলেজের সামনের সড়কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। পরে একটি শোক শোভাযাত্রা নিয়ে তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন।
স্মারকলিপি পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা পরিবর্তন ডটকমকে জানান, থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। সাজিয়ার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে ঘটনাটি তদন্ত করছে। যে বা যারাই জড়িত, তাদের ছাড় দেয়া হবে না।
এদিকে, নিহত সাজিয়ার মা নাসিম আরা শেখ, ভাই শেখ সাইজাদসহ স্বজনেরা কলেজ ক্যাম্পাসের মানববন্ধন কর্মসূচিতে এলে তাদের আহাজারীতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
এ সময় সাজিয়ার মা নাসিমা আরা শেখ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘কেন এমন হলো, আমার মেয়েকে কে খুন করল? আমি এ খুনের বিচার চাই।’ তিনি বলেন, ‘ছোট বেলায় ওদের বাবা মারা গেছে। দুটি সন্তান অনেক কষ্টে বড় করেছি। ওরাই আমার সব। আমি কেমনে এই শোক সইব।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুলতান মাহামুদ, অধ্যাপক আনিসুর রহমান, প্রভাষক তানজিয়া ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে, এই ঘটনায় নিহত শিক্ষিকা সাজিয়া বেগমের ফুফু আফসারী আহমেদ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
কোতোয়ালি থানার ওসি এএমএম নাসিম পরিবর্তন ডটকমকে জানান, সাজিয়ার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এখনো তার কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রয়োজন হলে তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ড চেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এ ছাড়া সোমবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে সাজিয়া ও ফারুকের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, রোববার রাতে ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলি এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজ শিক্ষিকা ও এক ব্যাংকারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ, যারা পাশাপাশি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।
নিহত কলেজ শিক্ষিকা সাজিয়া বেগম (৩৬) ফরিদপুরের সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন।
তিনি দুই ছেলেকে নিয়ে ফরিদপুর শহরের ওই বাসায় থাকতেন। তার স্বামী ঢাকায় ব্যবসা করেন। তাদের বাড়ি রাজধানীর সূত্রাপুর থানার বানিয়ানগরে।
আর ব্যাংক কর্মকর্তার নাম ফারুক হাসান (৩৮)। তিনি ফরিদপুরে সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখার অডিট কর্মকর্তা ছিলেন। তার বাড়িও ঢাকার আগারগাঁও এলাকায়।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস