গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল ঘোষণা চলছে। রিটার্নিং অফিসার হিসেবে ফল ঘোষণা করছেন ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম। প্রাপ্ত ফলে এখন পর্যন্ত বেসরকারিভাবে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী- ৪৮০ কেন্দ্রের মধ্যে ৪৪০ কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফলে জায়েদা খাতুন ঘড়ি প্রতীকে ২ লাখ ২৩ হাজার ৬১৯ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন। আর আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ৬ হাজার ৪৯৫ ভোট।
এদিকে ফলাফল ঘোষণায় দেরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী জায়েদা খাতুনের (টেবিল ঘড়ি) ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। আজ সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্রের অস্থায়ী বুথ বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে আসেন তিনি। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তাকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইভিএমে মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে সম্পূর্ণ রেজাল্ট পেয়ে যাওয়ার কথা। সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনো ফল প্রকাশ করা হয়নি। দিনের ভোটের ফলাফল দিনেই দেওয়া ভালো। আমরা রেজাল্টটা দ্রুত চাই। রাতে সন্ত্রাসী কাজ করবে সেসব কাজ কোনোভাবেই সাপোর্ট করবো না।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৪৮০টি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে চলে ভোটগ্রহণ। কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় ভোট।
সহিংসতার খবর না পাওয়া গেলেও কিছু কিছু জায়গায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে) ভোট দিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন অনেকে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট না মেলা, এক বুথের ভোটাররা অন্য বুথে যাওয়া নিয়ে ভোগান্তির সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ শোনা যায়।
সকালে এক প্রতিক্রিয়ায় জায়েদা খাতুন বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে তার এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। সুষ্ঠু ভোট হলে তিনি নির্বাচনী ফলাফল যাই হোক তা মেনে নেবেন। প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএমের ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
আজমত উল্লা খান বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল থেকে মানুষ ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়েছে। ভোটের যে কোনো ফলাফল অবশ্যই মেনে নেব। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। সবসময় জনগণের অপিনিয়নের প্রতি আমি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আসছি। আজ জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে, আমি সেটা অবশ্যই মেনে নেব। আমি রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সব সময় জনগণের সঙ্গে ছিলাম।
সিটি কর্পোরেশনের ৪৮০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ৩৩৩ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশ নেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন প্রার্থী আছেন। এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডে এই নগরের এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ জন, নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার আছে ১৮ জন।