মুসলিমদের পবিত্র ধর্মীয় এই গ্রন্থটি বার্মিংহামের লাইব্রেরিতে সবার অগোচরে অন্তত ১০০ বছর ধরে রয়েছে।
ব্রিটিশ লাইব্রেরি বিশেষজ্ঞ ড. মুহাম্মদ ইসা ওয়ালি এই পাণ্ডুলিপি সম্পর্কে বলেন, ‘এটি অসাধারণ আবিষ্কার। মুসলিমরা এই আবিষ্কারে আনন্দিত হবেন।’
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওকার্বন এক্সলেটর ইউনিটে পাণ্ডুলিপিটি পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার পর গবেষকরা বলেছেন, লেখার উপযোগী করে গড়ে তোলা পাণ্ডুলিপির ওই চামড়াটি ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ের।
এই পরীক্ষার পর গবেষকরা এটি প্রাচীনতম কুরআনের খণ্ডাংশ বলে নিশ্চিত হন। কারণ, রাসুল (সা.) ৬১০ খ্রীষ্টাব্দে নবুয়ত্ব প্রাপ্ত হন এবং ৬৩২-৩৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জীবিত ছিলেন।
গবেষকদের ধারণা, পাণ্ডুলিপিটি নবী করীম (সা.) এর জীবদ্দশাতেই হয়তো লেখা হয়েছে এবং কোনো একজন সাহাবী তা লিখেছিলেন।
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির মধ্যপ্রাচ্যের বইয়ের সংগ্রহশালায় কুরআনের এই খণ্ডাংশটি আবিষ্কৃত হয়।
একজন পিএইচডি গবেষক এই পৃষ্ঠাগুলো দেখে এগুলো বেশ পুরাতন বলে সন্দেহ করেন। এরপর তা রেডিওকার্বন বিভাগে পাঠানো হলে এর প্রাচীনত্বের বিষয়টি আবিষ্কৃত হয়।
তবে এগুলো যে এত বছরের পুরনো গবেষকরা তা ভাবতেও পারেননি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সংগ্রহশালার পরিচালক সুসান ওরাল।
বিশ্ববিদ্যালয়টির খ্রিস্টানত্ব ও ইসলাম বিষয়ের অধ্যাপক ডেভিড থমাস বলেন, ‘মুসলিম বিশ্বাস অনুযায়ী, নবী মুহাম্মদ (সা.) ৬১০ থেকে ৬৩২ খ্রীষ্টাব্দ সময়কাল জুড়ে কুরআনের বাণী প্রাপ্ত হন।’
তিনি আরো বলেন, ‘যিনি এই পাণ্ডুলিপিটি লিখেছেন তিনি সম্ভবত নবী (সা.) এর মুখ থেকেই তা শুনেছেন।’
মহানবী (সা.) এর সময়ে পশুর চামড়া, পাথর, গাছের ছাল ইত্যাদিতে কুরআনের আয়াত লিখে রাখা হতো। এটি সে সময়েরই লেখা বলে মন্তব্য করেন থমাস।
তিনি আরো বলেন, ৬৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে ইসলামের তৃতীয় খলিফা হয়রত উসমান (রা.) এর সময়ে কুরআনের লিপিগুলোকে একত্রিত করে বই আকারে তৈরি করা হয়। এর আগে ‘হিজাজি হস্তলিপিতে’ কুরআন লেখা হতো। আবিষ্কৃত খণ্ডাংশটিও ‘হিজাজি হস্তলিপি’র বলে উল্লেখ করেছেন থমাস।
সূত্র: বিবিসি