সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১১:৩০:০৭

মাটির নিচে যাচ্ছে ডিএসসিসির বর্জ্যের কন্টেইনার!

মাটির নিচে যাচ্ছে ডিএসসিসির বর্জ্যের কন্টেইনার!

ওমর ফারুক : সড়কের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বর্জ্যের কন্টেইনার মাটির নিচে বা ভূতলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ জন্য পাইলট প্রকল্প হিসেবে মিরপুর সড়কের রাসেল স্কয়ারের কাছে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে বলে জানা যায়। পথে পথে বর্জ্যের কন্টেইনার এবং ওয়েস্টবিন স্থাপন করেও সুব্যবস্থাপনা না আসায় অবশেষে মাটির নিচেই বর্জ্য পাঠাতে চাইছে সিটি করপোরেশন। রবিবার এ খবর দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এমকে বখতিয়ার।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় বর্তমানে দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করে বর্জ্য এনে রাখা হয় সিটি করপোরেশন নির্ধারিত স্থান, ডাস্টবিন ও সড়কের ওপর রাখা কন্টেইনারে। প্রধান সড়ক ও পাড়ামহল্লার রাস্তাগুলোয় বর্জ্যের কন্টেইনার রয়েছে ৩৯০টি। সিটি করপোরেশনের ট্রাক দিয়ে এগুলো মাতুয়াইল ডাম্পিং স্টেশনে নেওয়া হয়।

জানা গেছে, বর্তমানে উৎপাদিত আড়াই হাজার টনের মধ্যে প্রায় ২ হাজার ২০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। বাকিটা রাস্তা ও অলিগলিতে পড়ে থাকে। ঠিকমত বর্জ্য ফেলা হয় না বলে ডাস্টবিন ও কন্টেইনারের আশপাশে সৃষ্টি হচ্ছে নোংরা ও দুর্গন্ধময় পরিবেশ। কন্টেইনার সংশ্লিষ্ট সড়কে যানজটও হচ্ছে নিয়মিত।

অন্যদিকে জায়গার অভাবে পরিকল্পনা করেও সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ করতে পারছে না ডিএসসিসি। এমনকি সম্প্রতি ফুটপাতে সাড়ে পাঁচ হাজার ওয়েস্টবিন স্থাপন করেও সফলতার মুখ দেখা যায়নি। এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে সিটি করপোরেশন বর্জ্যের কন্টেইনার ভূতলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এমকে বখতিয়ার বলেন, সড়কের ওপর কন্টেইনার রেখে বর্জ্য সংগ্রহ করায় অনেক সমস্যা হচ্ছে। যেখানে কন্টেইনার আছে, সেখান দিয়ে যান-চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। পরিবেশও ভালো থাকছে না। তাই এবার আমরা কন্টেইনার মাটির নিচে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। এর নাম হবে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড কন্টেইনার’। ধারণাটি আমাদের দেশে একেবারেই নতুন। তাই প্রাথমিকভাবে কলাবাগানে মিরপুর রোডে (রাসেল স্কয়ারের দক্ষিণ পাশে) একটি আন্ডারগ্রাউন্ড কন্টেইনার স্থাপন করব। সোমবার এর কাজ শুরু হবে।

তিনি বলেন, রাস্তা ও ফুটপাতের মাটির নিচে পানির রিজার্ভারের মতো জায়গা করা হবে। এর সাইজ হবে লম্বায় ১৫ ফুট ও প্রস্থে ১০ ফুট এবং গভীরতা ৭ ফুট। এখানে কন্টেইনার রেখে স্টিলের (চেকার প্লেট) ঢাকনা দিয়ে গর্তটি ঢেকে দেওয়া হবে। তখন পথচারী ও যানবাহন খুব সহজে ওই চেকার প্লেটের ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারবে। আর, ফুটপাতের ধারে চিমনির মতো জায়গা রাখা হবে। বাড়িঘর থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্য এই চিমনির মাধ্যমে কন্টেইনারে ফেলা হবে। চিমনির মুখে থাকবে স্প্রিং লোডেড দরজা। ধাক্কা দিলে এ দরজা খুলবে এবং বর্জ্য ফেলার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেগে যাবে। বর্জ্যভর্তি কন্টেইনার বের করে সঙ্গে সঙ্গে ওই গর্তে খালি কন্টেইনার স্থাপন করা হবে। এরপর স্টিলের ঢাকনা নামিয়ে দেওয়া হবে।

কমোডর এমকে বখতিয়ার বলেন, পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর পরিচালনা শুরু হলে এর ভাল-মন্দ দিকগুলো ধরা পড়বে। ভাল ফলাফল পেলে আরও প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে এ ব্যবস্থা চালু আছে। ওইসব দেশ এ জন্য আলাদা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছে। তবে আমরা আপাতত দেশীয় পদ্ধতি ব্যবহার করব। -বাংলা ট্রিবিউন।
১৪ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে