সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৫, ০১:৫৮:২২

গোয়েন্দা জালে সিজারের তিন খুনি !

গোয়েন্দা জালে সিজারের তিন খুনি !

নিউজ ডেস্ক : ইতালির নাগরিক তাভেলা সিজার হত্যা তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন গোয়েন্দারা। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এমন তিনজনের ব্যাপারেও তারা অনেকটা নিশ্চিত হয়েছেন।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা দাবি করেন, 'ওই তিনজন এখন গোয়েন্দা জালে। যে কোনো সময় তাদের গ্রেফতার করা হতে পারে।' অন্যদিকে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও হত্যার স্থান থেকে রোববার দুপুরে একটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের আট দিন পর এই খোসা পাওয়া গেল। তাভেলা হত্যার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৪ দিনের তদন্তে ধারণা পাওয়া গেছে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়েই তাভেলাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। তবে কর্মকর্তারা কাউকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত এ বিষয়ে আর কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তারা আশা করছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে খুব শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে।

এদিকে হোশি কোনিও হত্যার বিষয়ে রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নুল আবেদীন জানান, কোনিওকে যেখানে গুলি করে হত্যা করা হয় সেই স্থানে গ্রাউন্ড সোর্স মাইন মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করে মাটির দেড় ইঞ্চি গভীর থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যা ঘটনার পরও সেখান থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছিল। তিনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের স্থানটি এখনো ক্রাইম সিন দিয়ে ঘিরে রাখা আছে। পুলিশ পাহারাও রয়েছে।

এ ছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামুনুর রশীদ মামুন জানান, রিমান্ডে থাকা মামলার আসামি কোনিওর বাড়িওয়ালার শ্যালক হুমায়ুন কবীর হীরার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গুলির ওই খোসাটি উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে দুই সদস্যের একটি জাপানি প্রতিনিধিদল রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকের পর জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার গণমাধ্যমকে জানান, তারা কোনিও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন। আমরা সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি। তবে কোনিওর লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, কোনিও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শুক্রবার পাবনা শহরের পুরনো এতিমখানা পাড়া থেকে আটক সিএনজি অটোরিকশার চালক সুইট হোসেনকে রোববার বিকালে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। সুইট জাকারিয়া বালার খালাতো ভাই। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ জানায়, অজ্ঞাত পরিচয় তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হলেও আটক দুজনকে আসামি দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় ৬ অক্টোবর। এদের মধ্যে কোনিওর বাড়িওয়ালার শ্যালক হুমায়ুন কবীর হীরা রিমান্ডে রয়েছেন। অন্য আসামি মহানগর বিএনপির সদস্য রাসেদ উন নবী খান বিপ্লবের রিমান্ড বাতিল করে শনিবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ ছাড়া কোনিওর বাড়িওয়ালা জাকারিয়া বালা, রিকশাচালক মোন্নাফ আলী, যে বাড়ির সামনে নিহত হন কোনিও সেই বাড়িওয়ালার ছেলে মুরাদ হোসেনকে এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কোনিও হত্যাকাণ্ড তদন্তে পুলিশ সদর দফতরের গঠন করা পাঁচ সদস্যের কমিটি প্রধান পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি হুমায়ুন কবীর জানান, রংপুর নগরীর মুন্সিপাড়ার জাকারিয়া বালা এক সময় জাপানে থাকতেন। তার ছোট দুই ভাই এখনো জাপানে থাকেন।

সেই সূত্র ধরে ২০১১ সাল থেকে কোনিও রংপুরে যাতায়াত করেন। সর্বশেষ ২৮ আগস্ট আসার পর জাকারিয়া বালার বাড়িতে ভাড়া থেকে কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি গ্রামে দুই একর জমি ইজারা নিয়ে জাপানি কোয়েল ঘাসের চাষ শুরু করেন। ৬৬ বছর বয়সী কোনিও অবিবাহিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ৩ অক্টোবর সকালে নগরীর মুন্সিপাড়া থেকে রিকশায় কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি গ্রামে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন কোনিও।-বিডিপ্রতিদিন
১২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে