রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৬:২৪:৩৩

অসহায়দের ছবি তুলে দৃষ্টি ফেরাতেন এমপি-পুত্র অনিক

অসহায়দের ছবি তুলে দৃষ্টি ফেরাতেন এমপি-পুত্র অনিক

সাতক্ষীরা থেকে : তারুণ্যের আবেগে মাতিয়ে রাখতেন চারপাশ। প্রিয় ক্যামেরা নিয়ে সারাদিন ছুটে বেড়াতেন পথে-প্রান্তরে। সমাজের অসহায়দের ছবি তুলে ফেসবুকে প্রচার করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন। জড়িত ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গেও।

মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে চলতেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু হঠাৎ এই প্রাণ চাঞ্চল্য ছেলেটির আত্মহত্যায় সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের জাসদের এমপি অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহর ছেলে ছিলেন অনিক আজিজ। তার এ চলে যাওয়া কারো কাছে সহজবোধ্য নয়। তবে রাজধানীতে এমপিদের বাসস্থান ন্যাম ফ্ল্যাটের কর্মকারীরা বলাবলি করছেন প্রেমই কাল হলো তার।

প্রসঙ্গত, এমপিদের বাসস্থান ঢাকার ৫নং ন্যাম ভবনের ৫০৪ নম্বর ফ্ল্যাটে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। শনিবার রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটে। অনিক খুলনার সিটি পলিটেকনিক থেকে ইলেকট্রিক্যালে ডিপ্লোমা করেছেন। অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য। এবারই প্রথম তিনি এমপি হন।

মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। এ সময় হাসপাতালের মর্গের সমানে কথা হয় দৈনিক দক্ষিণের মফশালের নির্বাহী সম্পাদক ও জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সিনিয়র সভাপতি মিনাজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি এমপি মুস্তফা লুৎফুল্লাহর বন্ধু।

তিনি বলেন, অনিকের শখ ছিল ছবি তোলা। নিপীড়িন মানুষের ছবি তুলে ফেসবুকে আপ করত। কোনো নিপীড়ন বা অনিয়ম দেখলেই ছবি তুলে ফেসবুকে দিত। সে ছাত্রমৈত্রী করত। এমপির ছেলে হিসেবে কে কখনও স্পেস দখল করেনি। এমনকি এমপির গাড়ি ব্যবহার করে দশ হাত দূরেও যায়নি। গণজাগরণ মঞ্চে এক মাসেরও বেশি সময় ও মুক্তিযুদ্ধের ছবি প্রদর্শন করেছিল। প্রতিদিন রাত ৮টা পর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ছবিগুলো দেখাতো সে। পজেটিভ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে অনিক।

অনিকের ছোটবোন বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আদৃতা সৃষ্টি বলেন, বাবা-মার সঙ্গে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল ভাইয়ের। ছেলে আর বাবা এক জায়াগায় বসে থাকলেও কেউ কখনও বুঝতে পারত তারা বাবা-ছেলে। বাবা কখন বাবার জায়গা থেকে কথা বলেনি। বন্ধুর মতো ইয়ার্কি ফাজলামি করেছে। আত্মহত্যার আগেও আমরা রাত ১১টা পর্যন্ত গল্প করেছি। এরপর কী হয়েছে আমি কিছুই বলতে পারব না।

অনীকের ফেসবুক ঘেটে পারিবারিক কয়েকটি ছবিতে বাবা-মা আর দুই ভাইবোনকে হাস্যেজ্জ্বল দেখা যায়। এছাড়াও প্রকৃতির সুন্দর দৃশ্যও ধারণ করে ফেসবুকে দিত সে। ছবি তোলার সখ থেকেই পাঠশালায় ফটোগ্রাফির কোর্স করেছিলেন তিনি।
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে