কিছুক্ষণের মধ্যেই সাকা-মুজাহিদের রায়
ঢাকা : মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আবেদনের রায় আজ (বুধবার) সকাল সাড়ে ১১টায় ঘোষণা করবেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই দুজনের রায়ের জন্য অপেক্ষা করছে গোটা বাংলাদেশ।
সকাল ৯টা ৫ মিনিটে সাকার রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়ে চলে ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত।সাকা চৌধুরীর প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন আসামিপক্ষে এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেবেন। অন্য বিচারপতিরা হচ্ছেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
মঙ্গলবার জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের আবেদন শুনেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গতকাল বিকেলে প্রকাশিত বুধবারের কার্যতালিকায় মুজাহিদের আবেদনের আদেশের সময় দেয়া রয়েছে বেলা সাড়ে ১১টা। আজ সাকার শুনানি শেষে একই সময়ে রায় দেয়া হবে বলে জানান আদালত।
এদিকে সাকা-মুজাহিদের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবারের মতো আজও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ও এর আশপাশের এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ভোর থেকেই নিরাপত্তাকর্মীরা এই এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন।
২০১৩ সালের ১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মুজাহিদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছিলেন। ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে মুজাহিদের আইনজীবীরা সর্বোচ্চ আদালতে গেলে সর্বোচ্চ আদালতও ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখেন। তবে প্রসিকিউশনের আনা সাতটি অভিযোগের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল তাকে তিনটিতে মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিল বিভাগ শুধুমাত্র ষষ্ঠ অভিযোগে অর্থাৎ বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখেন।
৩০ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর দণ্ড থেকে বাঁচতে মুজাহিদের সামনে খোলা ছিল রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পথ। আজ এতেও যদি তার দণ্ডই থেকে যায় তবে ফাঁসি থেকে বাঁচতে তার সামনে খোলা থাকবে একটাই রাস্তা, তা হলো রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা।
৩০ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর সঙ্গে মুজাহিদের মামলার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। এরপর দুজনের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিই একসঙ্গে যায় ট্রাইব্যুনালে। এরপর ১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানা জারি করলে তা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে দেয়া হয়।
তবে আসামিপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করায় ফাঁসির রায় কার্যকর প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থগিত হয়ে যায়; মৃত্যুপরোয়ানা জারির মধ্যে দিয়ে যা শুরু হয়েছিল।
নিয়ম অনুসারে সে থেকে নির্ধারিত ১৫ দিনের মধ্যেই রিভিউ আবেদন করেন মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরী। যদি এ রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যায় এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাইলে দু’জনেরই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।
১৮ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ