সোমবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৮, ০৬:১৪:৫৮

বেঁচে ফেরা নিয়ে যা বললেন সেই তিনজন

বেঁচে ফেরা নিয়ে যা বললেন সেই তিনজন

ডিবি অফিস থেকে ফিরে আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন নেতা। তারা জানান, ডিবি পুলিশ যেভাবে তাদের তুলে নিয়ে গেছে তা অপহরণ। তাদের ছেড়ে দেওয়ার সময় বলা হয়, তোমরা চলে যাও, ডাকলে আবার আসবে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সম্পৃক্ত সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তিন নেতা যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুরুলকে সোমবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তিনটি মোটরসাইকেল ও একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকার এসে তাদের তুলে নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর তারা ছাড়া পান।

এ বিষয়ে ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেছেন, ‘কিছু তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য নেওয়া হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে কিছু ভিডিও ফুটেজ এসেছে। আমরা সেগুলো তাদের দেখিয়েছি ও প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্য জানতে চেয়েছি। তথ্য নেওয়ার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক বলেন, ‘তুলে নেওয়ার পর সাদা রঙের গাড়িটি গুলিস্তানের দিকে চলে যায়। এরপর গুলিস্তান থেকে তিনটি নতুন গামছা কিনে আমাদের চোখ বেঁধে ফেলা হয়। এরপর মাথায় হেলমেট পরতে দেওয়া হয়। এমন অবস্থায় আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। কোনো কথা বলতে পারছিলাম না। এর কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারি, আমাদের ডিবি অফিসে নেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল এলাকা থেকে আমাদের তুলে নেওয়ার সময় অনেক মানুষ দৃশ্যটি দেখেছে। লোকজন টের না পেলে হয়ত আমরা প্রাণে বেঁচে ফিরতে পারতাম না। এ পৃথিবীর আলো-বাতাস আর দেখা হতো না।’

নুরুল হক বলেন, ‘ডিবি অফিসে নেওয়ার পর আমাদের বলা হয়, ভিডিও ফুটেজ দেখানো হবে। আমাদের অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। কিন্তু কোনো ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়নি।’

সোমবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অপর যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান।

তিনি বলেন, ‘যেভাবে আমাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এটি অপহরণ ছাড়া কিছু নয়। নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা বারবার তাদের পরিচয় জানতে চেয়েছি। তারা আমাদের পরিচয় না দিয়েই বলে, ‘এই ব্যাটা চুপ, গাড়িতে ওঠ।’

এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাশেদ বলেন, ‘আমার বাবা একজন দিনমজুর। আমি কোনো রাজনীতি করি না। কিন্তু আমার অসহায় বাবাকে ঝিনাইদহ সদর থানায় আটকে রাখা হয়েছে। আমরা জামায়াত-শিবির করি, তার কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা চলছে। এর বিচারের ভার আমি দেশবাসীর কাছে দিয়ে রাখলাম। আমাদের বিরুদ্ধে কঠিন ষড়যন্ত্র চলছে।’

আন্দোলনের অপর একজন নেতা ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা চিৎকার দিয়ে বলেছিলাম, আমাদের বাঁচাও। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। আমাদের ডিবি অফিসে বসিয়ে রাখা হয়। অামরা পানি খেতে চাইলেও আমাদের পানি দেওয়া হয়নি। ছেড়ে দেওয়ার সময় ডিবি পুলিশ বলেছে, তোমরা চলে যাও, ডাকলে আবার আসবে।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে