শনিবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ০৮:৪৩:১৫

জাবি ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করল সহপাঠীরা

জাবি ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করল সহপাঠীরা

এমটিনিউজ ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পার্শ্ববর্তী আমবাগান এলাকায় ভাড়া বাসায় ফাঁস দিয়ে কাজী সামিতা আশকা নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ বর্ষের (৪৮ ব্যাচ) এক শিক্ষার্থী আত্মহ'ত্যা করেছেন। খুলনায় থাকা বন্ধুর ফোন পেয়ে বাসায় গিয়ে আশকার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান সহপাঠীরা।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী আমবাগান এলাকা থেকে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আশকার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার সদর উপজেলায়। আশকা আমবাগান এলাকায় ৫০ ব্যাচের চারজন জুনিয়রের সঙ্গে বাসা ভাড়া করে থাকতেন।

ঘটনার সময় তার রুমমেটরা কেউই বাসায় ছিলেন না। আশকার বন্ধু তুর্য খুলনা থেকে মোবাইল ফোনে জানালে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রুমমেট ও সহপাঠীরা। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ অবস্থায় রাত সাড়ে ৮টায় কিছু আগে সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তারা। সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে বন্ধুর সঙ্গে কোনো ঝামেলার কারণে তিনি আত্মহ'ত্যা কর‍তে পারেন বলে জানা গেছে।

আশকার রুমমেট শর্মী ও মাইশা জানান, আমরা আজকে কেউই বাসায় ছিলাম না। মাইশা সন্ধ্যার কিছু আগে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আশকাকে তার বন্ধু তূর্যর সঙ্গে ভিডিও কলে ঝগড়া করতে দেখেন। পরে রাত সাড়ে ৮টায় তূর্য আশকার বন্ধু সামিহাকে ফোন করে দ্রুত বাসায় যেতে বলেন। বাসায় গিয়ে তারা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। তখন বাইরে থেকে দরজা ভেঙে তারা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসেন। পরে সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে এনাম মেডিকেলে পাঠান।

আশকার বন্ধু খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার জামান তূর্য মোবাইল ফোনে জানান, আশকার সঙ্গে আমার তেমন ঝগড়া হয়নি। ওর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছিলাম। পরে হঠাৎ করে কল কেটে যায়। পরে আর তাকে না পেয়ে আমি ওর বন্ধুদের বাসায় যেতে বলি।

বন্ধু গিয়াস উদ্দিন মুন্না ও শাকিল জানান, আমরা রাত সাড়ে ৮টায় খবর পাই যে আশকা সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। তাকে সে অবস্থা থেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসি। পরে তারা সাভারের এনাম মেডিকেলে পাঠায়। হাসপাতালের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আশকার আরেক বন্ধু মুজতাহিদ জানান, আশকা খুবই হাসিখুশি ও প্রাণবন্ত মেয়ে ছিল। তার সঙ্গে তার বন্ধুদের কারো কখনো ঝামেলা হয়েছে বলে শুনিনি। পরিবারের সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক ছিল। তবে বন্ধুর সঙ্গে ঝামেলায় সে আত্মহ'ত্যা করতে পারে।

ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হোসনে আরা বলেন, আমাকে শিক্ষার্থীরা ফোন করে দ্রুত একটা অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দিতে বলে। কিন্তু তারা আমাকে সুইসাইডের কথা জানায়নি। পরে আমরা হাসপাতালে এসে জানতে পারি যে সে আত্মহ'ত্যা করেছে।

এনাম মেডিকেলের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. অর্ণব বলেন, আমাদের এখানে তাকে রাত সাড়ে ৯টায় নিয়ে আসা হয়। ইসিজি রিপোর্ট দেখে আমরা বুঝতে পারি অন্তত আধঘণ্টা পূর্বে তার মৃত্যু হয়েছে। এটা যেহেতু অস্বাভাবিক মৃত্যু, পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর আমরা মৃতদেহ পরিবারকে বুঝিয়ে দিব।

সাভার থানার এসআই আল মামুন কবির বলেন, প্রাথমিকভাবে ফাঁস দিয়ে আত্মহ'ত্যা বলে শনাক্ত করেছি। বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়ার কারণে সে আত্মহ'ত্যা করতে পারে বলে জানতে পেরেছি। সাক্ষী এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে আমরা পরিবারকে মৃতদেহ বুঝিয়ে দিতে পারব।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে