এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : দীর্ঘ পনেরো দিন অস্থির থাকার পর কমতে শুরু করেছে বরিশালের পাইকারি বাজারে চালের দাম। ক্রেতা ধরে রাখা ও প্রশাসনিক চাপে মোকামের চেয়ে কেজি প্রতি একলাফে দুই টাকা কমে চাল ছাড়ছেন আড়তদারেরা।
যদিও খুচরা বাজারে আগের মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে চাল। তবে সপ্তাহের মধ্যে পাইকারি ও খুচরা বাজারে আরও দাম কমতে পারে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।
সর্বশেষ শনিবার বরিশালের পাইকারি আড়ত ফড়িয়াপট্টিতে মিনিকেট প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬৬ টাকা, আটাশ বালাম ৫৪ টাকা এবং বুলেট বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজিতে।
এর আগের দিন শুক্রবার একই বাজারে মিনিকেট ৬৮ টাকা, আটাশ বালাম ৬০ টাকা আর বুলেট ৫৫ টাকা বিক্রি হয়। যদিও মাসের প্রথম সপ্তাহে মিনিকেট বিক্রি হতো ৬০ টাকা, আটাশ বালাম ৫৬ টাকা ও বুলেট ৫২ টাকায়।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মিনিকেট প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৬৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটাশ বালাম ৫০ থেকে ৫২ টাকায় আর বুলেট ৪৭ ও ৪৮ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চালের বাজারে অস্থিরতার খবরে রোববার জেলা প্রশাসনের তদারকি টিম ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পরিদর্শন করে দাম কমিয়ে চাল বিক্রির নির্দেশনা দিয়ে যান। এজন্য রোববার বিকেল থেকে কেজিতে ২ টাকা কমিয়ে চাল বিক্রি করছেন আড়তদারেরা।
মেসার্স জেবিন এন্টারপ্রাইজের পরিমল মিত্র বলেন, প্রশাসন থেকে বলে গেছে, আড়তে চাল আছে সুতরাং কম দামে বিক্রি করতে হবে। মোকামে কিন্তু এখনো দাম কমায়নি। আমরা লোকসানে চাল বিক্রি করছি।
নিউ বিসমিল্লাহ তহবিলের মিজানুর রহমান জানান, লোকসান হলেও কম দামে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে। মোকামে দাম না কমালে আমাদের ব্যবসায় আরও ক্ষতি হবে।
আড়তদার বিজয় সরকার বলেন, মিলাররা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের জিম্মি করে থাকে। বরিশালে রোববার থেকে দুই টাকা কমে কেজিতে চাল বিক্রি হলেও আমরা যে মোকাম থেকে চাল এনে বিক্রি করি সেখানে চালের দাম কমেনি। ফড়িয়াপট্টির আড়তদাররা ক্রেতা ধরে রাখার জন্য দুই টাকা কমিয়েছে। সরকার মোকামের ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ সৃষ্টি না করলে চালের দাম কমানো সম্ভব হবে না।
ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মোকাম থেকে বরিশালের ফড়িয়াপট্টির আড়তে প্রতিদিন ২০টি ট্রাকে চাল আসে। চালের বাজারের অস্থিরাতায় ক্রেতা কমেছে। ক্রেতা কমে যাওয়ায় এখানকার আড়ৎদাররা মোকাম থেকে চাল আনেননি একদিন। ক্রেতাদের স্বার্থে বরিশালে দুই টাকা করে দাম কমিয়ে বিক্রি করলেও আশানুরূপ ক্রেতা বাড়েনি।
বাংলাবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী ইমরান বলেন, আমরা বেশি দাম দিয়ে চাল কিনেছি। সেই চাল এখনো শেষ না হওয়ায় বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। আসলে প্রতি বছর এ সময়ে মিল মালিক, আড়তদার আর বড় বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চাল মজুদ করে দাম বাড়ায়। খুচরা বিক্রেতাদের হাতে করার কিছুই নেই। আমরা যেমন দামে কিনি তার থেকে সামান্য লাভে ক্রেতা পর্যায়ে ছেড়ে দেই।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরিশাল জেলার উপ-পরিচালক সুমী রাণী মিত্র বলেন, চালের দাম মূলত মিল থেকে বাড়ানো হয়। আমরা মিলগুলোকে পর্যবেক্ষণ করছি। বরিশালে যেহেতু উল্লেখযোগ্য কোনো চালের মিল নেই সেজন্য আপাতত অভিযান চালানো হয়নি। তবে জেলা প্রশাসক স্যার নিজে চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসবেন। তিনি ঢাকায় রয়েছেন। ফিরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে নির্দেশনা দেবেন।