শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৩:৪৭:০৭

যারা ফ্রিতে চড়তে পারবেন মেট্রোরেলে

যারা ফ্রিতে চড়তে পারবেন মেট্রোরেলে

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : যানজটের নগরী ঢাকায় স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে মেট্রোরেল। তাই স্বল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে মেট্রোরেলে ভিড় করছেন রাজধানীবাসী। 

প্রতিদিনই বাড়ছে যাত্রী সংখ্যাও। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সবগুলো স্টেশন চালুর পর থেকে যাত্রীদের ভিড়ও বেড়েছে বহুগুণ। তবে যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই জানেন না, কারা ফ্রিতে মেট্রোরেলে চড়তে পারবেন।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বলছে, ৩ ফুটের কম উচ্চতার বাচ্চাদের মেট্রোতে চড়তে কোনো টিকিট কাটা লাগবে না। এছাড়া যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরও ভাড়া দিতে হবে না।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার স্টেশন ঘুরে ভাড়া আদায়ের কক্ষের সামনে একটি সাইনবোর্ড দেখা যায়।

সাইনবোর্ডে লেখা, ‘তিন (০৩) ফুটের বেশি উচ্চতার বাচ্চা/শিশুর জন্য টিকিট ক্রয় বাধ্যতামূলক।’ এটি প্রত্যেকটি স্টেশনেই যাত্রীদের উদ্দেশে লিখে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে মেট্রোতে চড়তে ৩ ফুটের কম উচ্চতার বাচ্চাদের টিকিট সংগ্রহ করতে হবে না। তারা টিকিট ছাড়াই ফ্রিতে ভ্রমণ করতে পারবে।

ডিএমটিসিএল জানায়, মেট্রোরেলে চলাচল করতে শিশু ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাড়া দিতে হবে না। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম উচ্চতা তিন ফুটের কম হতে হবে এবং সঙ্গে অভিভাবক থাকতে হবে। কেবল সেক্ষেত্রে টিকিট কাটা লাগবে না। কিন্তু অভিভাবক সঙ্গে না থাকলে এবং তিন ফুটের বেশি হলেই তাকে গুনতে হবে প্রতি কিলোমিটারে ৫ টাকা। আর সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। অর্থাৎ মেট্রোরেলে চড়লেই লাগবে ২০ টাকা। গন্তব্য অনুযায়ী সে ভাড়া বাড়বে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা রাসেল শেখ বলেন,

মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও ৩ ফুটের কম উচ্চতার বাচ্চাদের টিকিট লাগে না। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে আমাদের দিলে আমরা তার তথ্য সংগ্রহ করে একটু জিরো ব্যালেন্সের কার্ড ইস্যু করে দেই। এরপর তারা প্রতিবার ভ্রমণে সে কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। আর বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অভিভাবকসহ এলে তাদের উচ্চতা যদি ৩ ফুটের নিচে হয় তাহলে শুধু অভিভাবকদের টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। বাচ্চার টিকিট লাগে না।

এছাড়া মেট্রোতে আছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের যাতায়াতের জন্য আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা। হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী ও খর্বাকার ব্যক্তিরা যাতে মেশিন থেকে সহজে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন, সে জন্য অপেক্ষাকৃত কম উচ্চতায় আলাদা টিকিট বুথসহ একইভাবে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী যাত্রীরা যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন, সে ব্যবস্থাও আছে।

মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের চলাচল শুরু হয় ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর। এর একদিন আগে ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন। আর গত ৫ নভেম্বর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে যাত্রী চলাচল শুরু হয়। এরও একদিন আগে ৪ নভেম্বর প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

উত্তরা থেকে মতিঝিল ও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটারের পুরো রুটটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ভ্রমণ করে মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০,০০০ যাত্রী বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ উদ্বোধন করেন। প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মূলত মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.৬ কিলোমিটার বাড়তি অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন নতুন অনুষঙ্গ যুক্ত হওয়ায় খরচ বেড়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা।

মেট্রোরেল প্রকল্প নেয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে