শনিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৪, ১০:৪৭:৪০

শৈত্যপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়েছে ১৭ জেলায়, চলতি মাসের শেষে বৃষ্টি

শৈত্যপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়েছে ১৭ জেলায়, চলতি মাসের শেষে বৃষ্টি

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক :  দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। আগের দিন বৃহস্পতিবার ৯ জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও গতকাল শুক্রবার তা ছড়িয়েছে ১৭ জেলায়। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ কোথাও কোথাও রূপ নিয়েছে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে।

উত্তরে আরো বেড়েছে শীত পঞ্চগড়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহপঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় রেকর্ড করা হয়েছে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ (৪ থেকে ৬ ডিগ্রি) হিসেবে বিবেচিত।

আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ এই শৈত্যপ্রবাহ পার্শ্ববর্তী কোনো কোনো এলাকায়ও বিস্তার লাভ করতে পারে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে আজ দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে আগামীকাল দিন ও রাতের তাপমাত্রা উভয়ই বাড়তে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এবং খুলনা বিভাগের কোনো কোনো জেলায় শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে দু-এক দিন এবং তা পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে।’

আবুল কালাম মল্লিক বলেন, চলতি মাসের বাকি দিনগুলোতে বিকেল থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত শীতের অনুভূতি থাকবে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের আলোর প্রাপ্যতা বাড়বে।

খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় দিনে শীত কম থাকবে। রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেটে শীতের তীব্রতা দিনে ও রাতে তুলনামূলক কিছুটা বেশি থাকবে। 

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল রংপুর (আট জেলা) ও রাজশাহী (আট জেলা) বিভাগের সব জেলা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি) থেকে মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে।

মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে তিন জেলায়। কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৬.৮ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ৭.২ ডিগ্রি ও নওগাঁর বদলগাছীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.৫ ডিগ্রি।

মৃদু শৈত্যপ্রবাহ (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি) ছিল রাজশাহী, পাবনার ঈশ্বরদী, বগুড়া, রংপুর, নীলফামারীর ডিমলা ও সৈয়দপুর এবং চুয়াডাঙ্গায়।

উত্তরের জেলাগুলোতে কমলেও ঢাকায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে ১.২ ডিগ্রি। গতকাল ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চলতি মাসের শেষে আরেক দফা বৃষ্টি
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো এবং ঢাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা বাতাস ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় এসব অঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা কমে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে। তবে বাড়তে পারে রাতের তাপমাত্রা।

উত্তরে শীত বেড়েছে, বিপর্যস্ত জনজীবন
চলতি শীত মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। উত্তরের এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। উত্তরের হিমেল বাতাস আর কনকনে ঠাণ্ডায় এখানকার জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।

গতকাল দুপুরে জেলায় সূর্যের দেখা মিললেও তা শীতের অনুভূতিকে ছাপিয়ে যেতে পারেনি। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। বালু ও পাথর শ্রমিকরা পড়েছেন চরম সংকটে। জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ বরফঠাণ্ডা পানিতে নামতে পারলেও বেশির ভাগই বেকার সময় পার করছেন। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র না থাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেক দরিদ্র ও অসহায় মানুষ।

উত্তরের আরেক জেলা নওগাঁয়ও তাপমাত্রা কমে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। তিন-চার দিন ধরে দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিললেও শীত তেমন কমছে না। নওগাঁর বদলগাছীতে গতকাল সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল পথঘাট, বৃষ্টির মতো ঝরছিল কুয়াশা। কৃষকরা বলছেন, শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে পচন ধরেছে আলুতে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে