এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : গাইবান্ধা পলাশবাড়ী উপজেলা মহিলা দলের নবগঠিত কমিটিতে আওয়ামী মহিলা লীগের এক নেত্রীকে সভাপতি করা নিয়ে স্থানীয়ভাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শুধু তিনিই নন, মহিলা লীগের নারী নেত্রীদের আরো পদে রাখার বিষয়টিও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। অভিযোগ উঠেছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এই পদ দেওয়া হয়েছে তাদের। তবে শেষ পর্যন্ত ত্যাগী নেতাকর্মীদের দাবির মুখে কমিটি স্থগিতও করা হয়।
স্থানীয়দের দাবি, উপজেলা মহিলা দলের নতুন সভাপতি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ‘বান্ধবী’ হিসেবে পরিচিত। গত নির্বাচনে তিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা কমিটির সভাপতির পদ পাওয়া ওই মহিলা লীগ নেত্রীর নাম আরজিনা পারভীন চাঁদনী।
যিনি আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তার সাথে আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। এ ছাড়া তিনি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপির বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন বলেও বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর গাইবান্ধা জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ফরিদা ইয়াসমিন ও কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত একটি তালিকা ফেসবুকে প্রকাশিত হলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
তালিকায় মহিলা লীগের নেত্রীদের সভাপতি ও সাংগঠনিক পদে নাম থাকায় বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শুধু সভাপতি পদে নয় ওই তালিকায় আরও দেখা যায়, কমিটির সাংগঠনিক পদে রয়েছে নাসিমা আকতারেরর নাম। যিনি আগে আওয়ামী লীগের তাঁতী লীগের সভানেত্রী ছিলেন।
এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপি এবং এর সহযোগী সংগঠনের একাধিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রাজপথে লড়াই সংগ্রাম আমরা করি আমরা। হঠাৎ কেউ এসে সভাপতির পদ পেলে তা মেনে নেওয়া যায় না।
৫ আগস্টের পরে জন্ম নেওয়া ভূঁইফোড় কোনো নেতা-নেত্রী পলাশবাড়ীতে রাজনীতি করতে পারবেন না।’
এ দিকে ঘটনার দুই দিন পর তীব্র সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে গত ২২ তারিখ সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই কমিটি স্থগিত করা হয়।
জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ফরিদা ইয়াসমীন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল, পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলে নানা রকম প্রশ্ন ওঠায় ওই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।
তবে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁদনী বেগম বলেন, তার বাবা ও পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে ছবি থাকতেই পারে। এর মানে এই নয় যে তিনি আওয়ামী লীগ করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, টাকা নিয়ে মহিলা লীগের নেত্রীদের মহিলা দলে পদ দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা ও অপপ্রচার।-কালের কণ্ঠ