শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ১০:৪৩:১৮

'সঙ্গে একটি মেয়েও ছিল, ছেলেটা পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারায়'

'সঙ্গে একটি মেয়েও ছিল, ছেলেটা পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারায়'

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় রাজশাহী কলেজের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে দশটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। নিহতের নাম শিমুল শিহাব। তার বাসা রাজশাহী নগরীর মেহেরচন্ডী বুধপাড়া এলাকায়।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাথায় রক্তক্ষরণে শিমুল মারা গেছেন। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন বা রক্তের দাগ পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বজনদের দাবি তাকে মারধর করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানিয়েছেন, পালানোর সময় পড়ে গিয়ে আহত হন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের পেছনে একটি মেয়ের (বান্ধবী) সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন শিমুল। ওই সময় সেদিকে প্রক্টরের নিয়মিত টহল চলছিল। প্রক্টরের গাড়ি দেখে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যেতে থাকেন তারা। এ সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তারা। আহত অবস্থায় শিমুলকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথেই তার মৃত্যু হয়।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমরা লাইব্রেরী থেকে রুমে যাওয়া সময় দেখি আমাদের সামনে দিয়ে একজন খুব জোরে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। তার পেছনে একটা মেয়েও ছিল। কিছুদূর যাওয়ার পর ছেলেটি মোটরসাইকেলসহ রাস্তায় পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সে জ্ঞান হারায়। আশেপাশের শিক্ষার্থীরা তখন তার মাথায় পানি দেয়। পরে প্রক্টর সেখানে এসে মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন মেয়েটি বলে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে ছেলেটিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন ওইখানে অনেকে ব্যাডমিন্টন খেলছিল। হুট করে এই যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে নির্মাণাধীন রাস্তায় জোরে চালিয়ে আসতে থাকে। আর পেছন থেকে আশেপাশের মানুষ তাকে ধাওয়া করে। আমি ভেবেছিলাম মোটরসাইকেল আরোহী ছিনতাইকারী। আমি নিজেই সাইডে দাঁড়াই। ওই সময় তার সঙ্গে একটি মেয়েও ছিল। ছেলেটা পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারায়। তবে মেয়েটির কিছু হয়নি। ওই ছেলেকে কেউ মারধর করেনি।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, রাত দশটার দিয়ে আমি ঘটনা জানতে পারি। আমাদের সহকারী প্রক্টর টহল দিচ্ছিলেন। তখন এক ছেলে ও মেয়ে তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের পিছনে ছিল। প্রক্টরের গাড়ি দেখে তারা মোটরসাইকেলে করে দ্রুত চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। ওদিক দিয়ে রাস্তার কাজ চলছিল। সেখানেই দূর্ঘনাটি ঘটে। পরে আমাদের লোকজন তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে পাঠায়। সেখান থেকে তাকে রামেকে নেওয়া হয়। ছেলেটির বাইক প্রক্টর দপ্তরে আছে। কিছুক্ষণ আগে জানতে পারলাম ছেলেটি মারা গেছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে রাত ১১টার দিকে একজনকে নিয়ে আসা হয়। তবে তখন সে মৃত অবস্থায় ছিল। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। শরীরের বাইরের কোনো অংশে রক্তের দাগ পাওয়া যায়নি। তার মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ছেলেটি রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী।

দুর্ঘটনার ব্যাপারে রাজশাহীর মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেকে বলেন, “আমরা বিষয়টি খোঁজ খবর রাখছি। তবে সঠিক ঘটনাটি আমরা এখনো জানতে পারিনি। আমরা সবার সাথে কথা বলে ঘটনাটি জানার চেষ্টা করতেছি। মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো হয়নি, তবে হতে পারে।”

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে