এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বেসরকারি স্কুল-কলেজে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের এপ্রিল মাসের বেতনের প্রস্তাব এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়নি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এপ্রিলের বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এপ্রিলের বেতন না হওয়ায় আসন্ন ঈদুল আজহার আগে মে মাসের বেতন এবং উৎসব ভাতা পাবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যদিও মাউশির এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেল বলছে, ঈদের আগে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা মে মাসের বেতন ও উৎসব ভাতা পাবেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মনে করছে ঈদের আগে উৎসব ভাতা দেওয়া সম্ভব হলেও মে মাসের বেতন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক অনুবিভাগ-২) মো: মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এপ্রিল মাসের বেতনের প্রস্তাব চলতি সপ্তাহে পাঠানোর কথা। আগামী সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের এপ্রিলের বেতন হতে পারে। তবে মে মাসের বেতন ঈদের আগে হবে কি না সেটি নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।’
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ‘স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের প্রস্তাব প্রাথমিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পাঠায়। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে ইএমআইএস সেল বেতনের সারসংক্ষেপ তৈরি করে। এরপর সেটি মাউশির সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে আমাদের কাছে আসে। আমাদের এখানে কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন করে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন শেষে তা চিফ অ্যাকাউন্টস অফিস হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে যায়। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বেশ সময় লাগে।’
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ‘এপ্রিলের বেতনের প্রস্তাব পাঠাতে যদি মে মাসের অর্ধেক শেষ হয়ে যায়, তাহলে মে মাসের বেতনের প্রস্তাব পাঠাতেও একই সময় লেগে যেতে পারে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৭ অথবা ৮ জুন ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে। এর আগে শেষ কর্মদিবস ৫ জুন। ফলে খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে ঈদের আগে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের মে মাসের বেতন হবে না। তবে তাদের উৎসব ভাতা ঈদের আগে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন।
দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার এবং চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২০০ এর অধিক শিক্ষক-কর্মচারী ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসের বেতন পেয়েছেন। তবে তারা এখনো এপ্রিল মাসের বেতন-ভাতা পাননি। আগামী সপ্তাহে এপ্রিলের বেতন হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও ঈদের আগে মে মাসের বেতন না পাওয়ার সম্ভবনাই বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।