এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পিতৃত্বকালীন ছুটি চালুর বিষয়ে মিলেছে সুখবর। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত বিধিবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে।
সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে উঠে এসেছে এমন তথ্য। সেই প্রতিবেদনে জানা গেছে, সরকারি কর্মজীবীদের জন্য পিতৃত্বকালীন ছুটির বিষয়ে ফাইল চালাচালি শুরু হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের ৭৮টি দেশে পিতৃত্বকালীন ছুটি প্রচলিত হলেও বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে বেসরকারি পর্যায়ে আড়ং, ব্র্যাক ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্মীদের পিতৃত্বকালীন ছুটি দিয়ে থাকে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান, দেশে ২০১১ সাল থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাসে উন্নীত করা হয়। নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর প্রথম দেড় মাসে মায়ের শারীরিক অবস্থা নাজুক থাকে।
এ সময় বাবার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিদ্যমান আইনে পিতৃত্বকালীন ছুটির বিধান না থাকায় কর্মজীবী বাবারা সন্তান ও স্ত্রীকে যথাযথ সহায়তা দিতে পারছেন না।
তিনি আরো বলেন, প্রায় ৯০ শতাংশ সরকারি চাকরিজীবী বাবাকে অসুস্থ স্ত্রী-সন্তানকে হাসপাতালে রেখে অফিস করতে হয়। এতে নবজাতকের সঠিক যত্ন অনেক সময় সম্ভব হয় না। এ কারণে দিন দিন পিতৃত্বকালীন ছুটির দাবি জোরদার হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পাঠানো সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ভারতে বাবারা সবেতনে ১০ দিনের ছুটি পান, পাকিস্তানে এক মাস ও ভুটান-শ্রীলঙ্কায় ১০ দিন। স্পেনে এই ছুটি ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত দেওয়া হয়। সিঙ্গাপুর অ-ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পিতৃত্বকালীন ছুটি দিয়ে থাকে।
সারসংক্ষেপে আরো বলা হয়, স্বামী-স্ত্রী দুজনই চাকরিজীবী হলে পিতৃত্বকালীন ছুটি অপরিহার্য।
এ ছুটি কাটিয়ে বাবারা মানসিকভাবে স্বচ্ছন্দ হয়ে কাজে মনোযোগী হতে পারেন। একই সঙ্গে নবজাতকের মা মানসিক প্রশান্তি লাভ করেন এবং পরিবারে দৃঢ় বন্ধন তৈরি হয়।
সে কারণে বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস (পার্ট-১)-এর রুলস ১৯৭ সংশোধনের মাধ্যমে একটানা ১৫ দিন সবেতনে পিতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সদয় অনুমোদন কামনা করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এরআগে, অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, ‘পিতৃত্বকালীন ছুটি থাকলে মায়ের কতটা সুবিধা হবে আমার জানা নেই। তবে পিতৃত্বকালীন ছুটিতে শর্ত থাকা উচিত, পিতা কত ঘণ্টা বাচ্চার সেবা করেছেন, মায়ের সেবা করেছেন। সব লিখিতভাবে দিতে পারলে এই ছুটির বিষয়ে রাজি আছি। না হলে নেই।’
গত ১৮ আগস্ট রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। কর্মশালার আয়োজক স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ।