এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : শেষ সময়েও হাসিনাকে রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন তোফায়েল আহমেদ এ রকম মন্তব্য করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ।
তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে প্রথম দিনেই এক লাখ মানুষকে হত্যা করা হবে; তখন কেউই বাড়িতে থাকতে পারবে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেছিলেন।’ একই সুরে ওবায়দুল কাদেরও বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে এক লাখ মানুষকে হত্যা করা হবে।
তোফায়েল আহমেদ এবং ওবায়দুল কাদের এ ধরনের বক্তব্যে দিয়ে জনগণের মধ্যে এ ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করেছিলেন। একই সঙ্গে তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দীপিত করার চেষ্টা করেছিলেন।
রবিবার (৫ অক্টোবর) নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘ভয়েস বাংলা’য় মোস্তফা ফিরোজ এসব কথা বলেন।
মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, ‘দুঃখজনক, আজ তোফায়েল আহমেদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গতকাল একটি গণমাধ্যমের সংবাদের প্রেক্ষিতে জানতে পারলাম তিনি এখনো বেঁচে আছেন। তবে তার অবস্থা খুবই গুরুতর। এতই গুরুতর যে প্রতিদিন তার অবস্থা বা ব্রিফিং দেওয়া নিয়ে কেউ খোঁজ নেয় না। তার মৃত্যু সম্ভবত স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবেই গণ্য হবে।
বর্তমানে তিনি স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সেখানে কেউ তাকে আক্রমণ করছে না বা কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘যদি বিএনপি-জামায়াত প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসত তাহলে তাদের ক্ষোভ ও বিক্ষোভগুলো আরো প্রবলভাবে প্রকাশ পেত। তবে সেটা কি এই পর্যায়ে পৌঁছাত কি না, তা আমি নিশ্চিত নয়। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা বলেছিলেন, যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকে তাহলে প্রথম রাতে এক লাখ মানুষ আক্রান্ত হবে। ওবায়দুল কাদের বলছিলেন দুই লাখ।’
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘তারা কেন এমন কথা বলছিলেন? কারণ তারা জানেন তাদের অপকর্ম এবং ক্ষমতায় থাকার ধরন স্বাভাবিক পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত নয়। কারণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং সাধারণ নির্বাচন কার্যকর ছিল না। এ কারণেই তারা সাধারণ নির্বাচন দেওয়ার সাহস পায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুর্ভাগ্য হচ্ছে দলের সিনিয়র নেতারা কেউই শেখ হাসিনার ওপর চাপ তৈরি করতে পারেননি। তারা দেখছিলেন, দলের ভেতরে ও দেশের শাসন প্রক্রিয়ায় অসংগতি রয়েছে। যদি দেশ বা দল গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত না হয় এবং নির্বাচন না হয়, তাহলে উগ্রবাদীরা মাথা তুলে পরিস্থিতি খারাপ করবে। তারা সেই কারণেই হুঁশিয়ারি দিচ্ছিল—যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকে, প্রথম রাতে এক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিন্তু এই হুঁশিয়ারি কেবল ক্ষমতায় থাকার জন্য আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা।’
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এভাবে ক্ষমতায় থাকা আত্মঘাতী এবং এর একটি প্রায়শ্চিতের প্রয়োজন। এরশাদের পতনের সময় কিছু স্থানে হামলার ঘটনা ঘটলেও এরশাদ এবং সব মন্ত্রী দেশত্যাগ করে পালাননি। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে চলে আসছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের দুর্বৃত্তশাসন এমন চরমে পৌঁছেছিল তারা পালাতে বাধ্য হন।’
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পরিস্থিতির জন্য তোফায়েল আহমেদসহ আমির হোসেন আমু এবং অন্য সিনিয়র নেতারা বা দলের তরুণ নেতারা কোনো ভূমিকা পালন করেননি। বরং তারা উৎসাহ দিয়েছেন যে এভাবে ক্ষমতায় থাকতে হবে। আর এই কারণেই আজ তারা তার খেসারত দিচ্ছে।’