এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন বলেছেন, ‘অনেকে বলে থাকেন আমি শুধু জামায়াত ইসলামের লোকজনের সাথে ছবি তুলি৷ কথাটা সত্যি না৷ ১৫ বছরের কঠিন সময়ে কেউ বলতে পারবেন না, আমি কখনো জামায়াতকে ওপরে তুলেছি বা বিএনপিকে নীচে নামিয়েছি৷
বিএনপিকে নিয়ে তখন সমালোচনা করলে, বিএনপি আমাকে কিছুই করতে পারত না। কিন্তু আমার মুখ থেকে তাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দ বের হয়নি৷ দুইটা দলের প্রতি সমান সমান ভালোবাসা ছিল৷’
শুক্রবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, বিএনপি কিংবা জামায়াতের ওপরে যেখানে নির্যাতন হয়েছে, সেখানেই মনে হয়েছে নিজের পরিবারের কেউ আক্রান্ত হয়েছে৷ কঠিন সময়ে কেউ বলতে পারবে না কোনোদিন তারেক রহমান কিংবা জিয়া পরিবারের কাউকে নিয়ে কোনো কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছি। সেটার প্রতিদান অন্য কারো কাছে না পেলেও তারেক রহমানের কাছে পেয়েছি৷’
ইলিয়াস হোসাইন বলেন, ‘আজকে যারা বসন্তের কোকিল হয়ে নিজেদেরকে বিএনপির বাপ-দাদার জায়গায় ভাবছে, বিএনপির কিছু ভাই-বোনেরা বিভ্রান্ত হয়ে আমাদের অবদানকে ভুলে গিয়ে তাদেরকে বাবা-দাদা ডাকাও শুরু করেছেন৷ তবে আমার অবস্থান আগের মতোই আছে৷ কোনো দলের প্রতি বেশি বা কম না, আমি চাই জামায়াত এবং বিএনপি সীমার মধ্যে থেকে রাজনৈতিক বিরোধিতা করবে৷ যদিও আমার সেই শক্তি নেই, থাকলে বলতাম বিএনপি পাঁচ বছর, জামায়াত ৫ বছর করে ক্ষমতায় থাকুক৷ কিন্তু পরিস্থিতি দিনকে দিন কঠিন হচ্ছে, দুই দলের মধ্যে বিরোধ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যা মাঝেমধ্যে সংঘর্ষে রূপ নিচ্ছে৷ যে কারণেই মাঝেমধ্যে বিএনপিকে নিয়ে সমালোচনার জবাবে বিএনপির অনেকে আমাকে জামায়াত ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করেন৷’
‘যদি সত্যি বলতে বলেন, আবারও বলবো আওয়ামী লীগের ব্যাপারে জামায়াতের চেয়ে বিএনপি অনেক বেশি উদাসীন। আর অন্যান্য বিষয়গুলো মানুষের কাছে শুনে নিয়েন৷ আমাকে ট্যাগ দিয়ে খুব একটা মজা পাওয়া যাবে না।
কারণ আমি স্বঘোষিত রাজাকার, এর চেয়ে বড় ট্যাগ আর কি দিবেন? আপনি আমাকে যাই বলেন আমি আমার জায়গায় অটুট আছি৷’
তিনি বলেন, ‘আমার সমস্যা বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল না, আমার সমস্যা ভারতীয় আগ্রাসন৷ সেখানে ভুল করলে জামায়াত-বিএনপি কাউকেই ছাড়ব না৷ কয়েকদিন আগে জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ তাহের এসেছিলেন। তার সঙ্গেও আমার সাক্ষাত হয়েছে, সেই সাক্ষাতে আমি তাদের বিরুদ্ধে আমার যে অভিযোগ আছে, সে অভিযোগের কথা জানিয়েছি৷ আজকেও সম্মানিত আমিরের সঙ্গে সাক্ষাতে আমার মতামত জানিয়েছি৷ সন্তোষ শর্মাকে তাদের অনুষ্ঠানে আনার কারণে জামায়াতের আমিরকে যেভাবে কটাক্ষ করেছিলাম, তার জন্য ক্ষমা চেয়েছি। পাশাপাশি একই ভুল যেন তারা না করে সেটাও জানিয়েছি৷’
সবশেষে তিনি বলেন, ‘বিএনপির সবাইকে আমি শত্রু মনে করি না। তাদের মধ্যেও যারা ভারতপ্রীতি দেখায়, তাদের সমালোচনা করি; তারা শোধরালে পরে ক্ষমা চেয়ে নেব৷ যদি জিজ্ঞেস করেন, বিএনপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করি না কেন? তারা দেখা করতে চায় নাই, তাই করিনি।
জামায়াতের নেতারা দেখা করতে চেয়েছেন, তাই করেছি৷ ব্যক্তিগত ভালোবাসা কিংবা ক্ষোভ কোনোটাই বিএনপি কিংবা জামায়াত কারো প্রতিই নেই৷ যা মনে চায় করেন, জনগণ তাদের মতামত জানিয়ে দিবে। কিন্তু ভারতপ্রীতি আর ৭১ নিয়ে চুলকানি দেখালে আমার হাত থেকে রেহাই নেই৷ কথা পরিষ্কার৷’