মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৪:৫৬

অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র সাবমেশিন দিয়ে ‘ব্রাশফায়ার’ করার নির্দেশ

অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র সাবমেশিন দিয়ে ‘ব্রাশফায়ার’ করার নির্দেশ

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বন্দরগরী চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ড এবং অস্ত্রবাজি ঠেকাতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। 

আজ (মঙ্গলবার) পুলিশের সকল সদস্যের উদ্দেশে ওয়্যারলেসে দেওয়া এক বার্তায় তিনি আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী এবং অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র সাবমেশিন গান (এসএমজি) ব্যবহার করে ‘ব্রাশফায়ার’ করার নির্দেশ দেন। তবে এ আদেশ কোনো নিরস্ত্র মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। 

সিএমপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, মঙ্গলবার দুপুরে কমিশনার ওয়ারল্যাস সেটের মাধ্যমে টহল ও থানা পুলিশকে একাধিকবার নির্দেশ দেন— ‘শটগান হবে না, চায়না রাইফেলও বাদ, এখন এসএমজি ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে।’ 

একই সঙ্গে পুলিশের উদ্দেশে তিনি টহল ও অভিযানে শিশা শটগান, দুইটি গ্যাস গান এবং নাইন এমএম পিস্তল বহন করার নির্দেশ দেন। এ ছাড়া স্থায়ী চেকপোস্ট সাতটি থেকে বাড়িয়ে ১৩টি করার নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনার।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গত ৫ নভেম্বর নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত হন। একই ঘটনায় এরশাদ উল্লাহও আহত হন। পরদিন একই এলাকায় গুলিতে এক প্রতিবন্ধী রিকশাচালক আহত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিএমপি কমিশনার নতুন করে এ নির্দেশনা দেন। 

এ বিষয়ে সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, দেখামাত্র ব্রাশফায়ার হবে শুধুমাত্র অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের জন্য। নিরস্ত্র জনসাধারণের ওপর এটি প্রয়োগ করা হবে না। এমনকি আওয়ামী লীগের যারা ঝটিকা মিছিল করে এটা তাদের ওপর প্রয়োগ হবে না। তাদের গ্রেপ্তার করব, আদালতে সোপর্দ করবো।

তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য সন্ত্রাসীদের নগরে প্রবেশের সাহসই কমানো। আমাদের এলাকায় প্রকাশ্যে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসীরা যেন আর সাহস না পায়, সেজন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য নির্দিষ্ট সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করা। দণ্ডবিধি ৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত পুলিশ সদস্যদের আত্মরক্ষার অধিকার সবসময় রয়েছে। প্রয়োজনে সব দায় আমি বহন করব।

এর আগে ১১ আগস্ট নগরের বন্দর থানার সল্টগোলা ক্রসিং ইশান মিস্ত্রি হাট এলাকায় আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ ওরফে রানা গুরুতর আহত হন। পরদিন (১২ আগস্ট) ওয়্যারলেসে সিএমপির সব সদস্যের উদ্দেশে মৌখিক নির্দেশনায় সিএমপি কমিশনার বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে যে অস্ত্রের প্রাধিকার ছিল, ওই প্রাধিকার অনুযায়ী থানার মোবাইল পার্টি, পেট্রোল পার্টি, ডিবির টিমসমূহ ও সকল ফোর্স অস্ত্র ক্যারি করবে।

আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া এবং লাইভ এমুনিশন ছাড়া কোনো পেট্রোল পার্টি, মোবাইল পার্টি, ডিবির পার্টি, চেকপোস্ট পার্টি বের হবে না। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের প্রাধিকার অনুযায়ী লাইভ এমুনিশন ছাড়া কেউ বের হবে না। প্রাধিকার অনুযায়ী অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং স্যুট পরে তারপর ডিউটিতে যাবে, বলেন তিনি।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র রবার বুলেট দিয়ে কাজ হচ্ছে না। বন্দরে (বন্দর থানা) একজন এসআই গুরুতর আহত হয়েছেন। আরেকদিন আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটবে। বন্দর থানার অফিসার যে অবস্থায় পড়েছেন, ওই পরিস্থিতিতে পড়লে যেন লাশ ছাড়া মোবাইল পার্টি, পেট্রোল পার্টি ফেরত না আসে। পুলিশের কোনো টহল পার্টির সামনে অস্ত্র বের করলে, আই রিপিট, সেটা ধারালো অস্ত্র হতে পারে কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র হতে পারে, অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি হবে, এতে কোনো সন্দেহ নাই, সবাইকে বলছি। আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার, দণ্ডবিধি ৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত, আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার সকল পুলিশ অফিসারের আছে। অস্ত্র কিংবা কোপ দেওয়ার আগে অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি হবে। সরকারি গুলির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে