স্পোর্টস ডেস্ক : দেশের ক্রিকেটে মাঠ থেকে বিদায় নেওয়ার নজির খুব একটা নেই। বেশিরভাগই অনেকটা নিরবে ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দেন। কেউ বা ঘোষণাটাও দেন না। সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা জাতীয় দল থেকে এক প্রকার অঘোষিত অবসরে আছেন। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমরা বিদায় জানানোর মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়াকে। শেষমেশ একই পথে হাঁটলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও।
সবশেষ ৭ দিনের ব্যবধানে বাংলাদেশ জাতীয় দলের দুই তারকা ক্রিকেটার অবসরে গেছেন। গেল ৫ মার্চ ফেসুবকে এক পোস্টের মাধ্যমে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। এরপর গতকাল (বুধবার) মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও একইভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন সেই ফেসবুকেই।
যদিও মাহমুদউল্লাহ আগেই দুই ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। বাকি ছিল ওয়ানডে ফরম্যাট, সেটাও গতকাল নিয়ে নিলেন। মুশফিক অবশ্য টেস্ট ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন এখনো। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ক্রিকেটাররা কেন মাঠ থেকে বিদায় না নিয়ে ফেসবুকে অবসরের ঘোষণা দেন তা নিয়ে সমালোচনা হয় সব জায়গায়ই।
১৮-২০ বছরের ক্যারিয়ারে এসব ক্রিকেটাররা মাঠে দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। বিদায় বেলায় দর্শকরাও চান প্রিয় ক্রিকেটারকে শেষ বারের মতো মাঠে দেখতে। একই প্রশ্ন রেখেছেন সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনও। ঢাকা পোস্টকে জানালেন এই নিয়ে নিজের আফসোসের কথা।
মাহমুদউল্লাহর মাঠ থেকে অবসর না নেওয়া নিয়ে বাশার বলছিলেন, ‘মাঠ থেকে নিতে পারলে অবশ্যই ভালো হতো, সেটা ডিজার্ভ করে সে। বাংলাদেশ দলের জন্য যা করেছে, মাঠ থেকে নিলে খুব ভালো হতো। ভরা স্টেডিয়াম থেকে এসে বিদায় নিলে আমার মনে হয় সব থেকে প্রোপারলি হতো বিদায়টা।’
এদিকে মুশফিকের বিদায়ও মাঠ থেকে হলো না। সাবেক নির্বাচব হান্নান সরকারের আক্ষেপও সেখানেই, ‘হতে পারলে তো অবশ্যই ভালো হতো। আমি তো আসলে এ ব্যাপারে কিছু জানি না এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। যখন যুক্ত ছিলাম আগে তখন সে বিষয়ে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে সিলেক্টর বা বোর্ডের সাথে কথা হয়েছে কি না আমি জানি না, তবে নিশ্চয় হয়েছে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেট ওয়েলফেয়ার এসোসিশয়নের (কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক দ্রেববত পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, 'ক্রিকেটার মাঠ থেকে অবসর নেবে এটাই তো স্বাভাবিক, এটাই তো সংস্কৃতি। এখন আমাদের দেশে কেন হচ্ছে না, আমাদের সকলের জিনিসটা নিয়ে ভাবা উচিত। অবসরের পরিসীমাটা ক্রিকেটারকে বুঝতে হবে সঙ্গে ক্রিকেট বোর্ডকে বুঝতে হবে। আর এই সিদ্ধান্তটা একান্তই একজন ক্রিকেটারের সে কখন অবসর নিবে, কখন নিবে না। মাঠ থেকে নিবে নাকি প্রেস কনফারেন্স করে নিবে এটাও তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।'
'শচীন টেন্ডুলকারের মতো ক্রিকেটার বিদায় নিয়েছে। সেই সময় অন্যরকম একটা মুহূর্ত ছিল। কিন্তু আমাদেরকে অনুধাবন করতে হবে শচীনের বিদায় শুধুমাত্র কি তার জন্যই ছিল নাকি দর্শকদেরও।'-যোগ করেন তিনি।
মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারলে ভালো হতো তবে ক্রিকেটারদের ইচ্ছাকেও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বললেন দেবব্রত, 'মুশফিকুর রহিম-মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বাংলাদেশের সব থেকে সুশৃঙ্খল ক্রিকেটার। তাদের অবদান দেশের ক্রিকেটে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তি এবং ক্রিকেটার উভয় হিসেবে। তবে একান্ত সিদ্ধান্ত তাদের তারা কখন অবসর নিবে, কিভাবে নিবে। তাদের যেহেতু অনেক ভক্ত রয়েছে তাদের প্রতি একটা সম্মান থাকা উচিত। দর্শকদের কেউ তাদের সেই বিদায়ের অংশীদার করা ভালো ছিল পাশে রেখে।'