সিদ্ধার্থ সিধু (বার্তা প্রধান) : কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- এমনটি প্রমাণ করার কোনো জো ছিল না। ভোটগ্রহণের সারাদিন বিএনপি নেতাকর্মীর দৃশ্যমান কোনো নাম-গন্ধও ছিল না।
চাপা উত্তেজনায় ভীতসন্ত্রস্ত ছিল সর্বমহলে। পুরো মাঠ ছিল সীমার নৌকার দখলে। তবে দিন শেষে ছক্কাটা হাঁকালেন সাক্কুই। মাঠে নয়, ধানের শীর্ষ নিয়ে ভোটেই খেললেন বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক ছাক্কু।
বৃহস্পতিবার দিনভর কুসিক নির্বাচন যদি লক্ষ করে দেখেন, তাহলে দেখা যায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকের মনিরুল হক সাক্কু রাজনীতি ছিল সকাল থেকেই মাঠছাড়া। চারদিকে শুধু নৌকার পোস্টার। আলোচনাতেও ছিল নৌকা। নৌকার সমর্থকদের দখলে ছিল ভোটকেন্দ্রগুলো। কেন্দ্রগুলোয় ধানের শীষ প্রতীকের চিহ্ন বলতে কিছুই ছিল না বললে চলে।
সকাল থেকে বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আঞ্জুমান সুলতানা সীমার নৌকা প্রতীক ছাড়া অার যেন কিছুই চোখে পড়ার মতো ছিল না। ভোটকেন্দ্রগুলো ছাড়া শহরজুড়েই নৌকার পোস্টার সাঁটানো ছিল। নৌকা প্রতীক গলায় ঝুলিয়ে কেন্দ্রগুলোর প্রবেশ মুখও দখলে ছিল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা।
কেন্দ্রগুলোর সামনে দু’একটি জায়গায় ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার চোখে পড়লেও বিএনপির কোনো নির্বাচনী ক্যাম্প চোখে পড়েনি। চোখে পড়েনি সাক্কু সমর্থকদের উপস্থিতিও। আর এ নীরবতাই যেন সাক্কুর ভাগ্য ফেরালো। মাঠে না থেকেও ভোটেই ছক্কাটা হাঁকিয়ে দেয় বিএনপির এই নেতার সমর্থকরা।
অন্যদিকে কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের হাতেই সবশেষ গুটির চাল ছিল বলে মনে করছেন আরেকটি মহল। তারা মনে করছেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার বাবা প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আফজাল খানের সঙ্গে দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত হিসেব মিটিয়েছেন বাহার। প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকের পক্ষ নিলেও গোপনে ধানের শীষেই সিল মারেন বাহার সমর্থকরা।
তবে নজিরবিহীন নিরাপত্তার কারণে ভোটের দিন সকাল থেকে স্বস্তি ছিল জনমনে। নিরাপত্তায় আস্থা পেয়েই সাধারণ ভোটাররা কেন্দ্রে আসেন। যার ফল সাক্কুর ঘরে গিয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকে। আর কুমিল্লার এই নির্বাচনের ফল জাতীয় রাজনীতির হিসাব-নিকাশও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সেই সাথে নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করে বিএনপি সমর্থকরা।
৩০ মার্চ ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস