খোরশেদ আলম: ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের আগের দিন ২৬ জানুয়ারি বাবার অবস্থা খুব খারাপ ছিল। তখন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সমাবর্তনের দিন অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়। এদিন মনের অজান্তে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আমাকে তাঁর “জন্মদাত্রী মা” বলে সম্বোধন করেন বাবা। এটাই আমার সমাবর্তন সম্মাননা। বাবা জানতেন না ২৭ জানুয়ারি আমাদের সমাবর্তন। আইসিইউর সবুজ গাউন ও টুপি কালো গাউনের অপূর্ণতাটা পূরণ করেছিল সেদিন। এটাই আমার জন্য শ্রেষ্ঠ ডিগ্রি।’
কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উর্মি আচার্য। বাবা নারায়ণ আচার্যকে নিজের ৬৭ শতাংশ লিভার দান করেছেন তিনি।
শর্মী আচার্য ও উর্মি আচার্য দুই বোন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী। বড় বোন শর্মী ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ (সপ্তম ব্যাচ) গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী। ছোট বোন উর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ (অষ্টম ব্যাচ) অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগে পড়েন।
২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস। উর্মি আচার্য তখন দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারে। বাবা নারায়ণ আচার্যের কিছুদিন ধরে পেটব্যথা, কিছু খেতে পারতেন না। হঠাৎ রক্তবমি হলো। হাসপাতালে ভর্তির পর জানা গেল তিনি লিভার সিরোসিসে আ'ক্রা'ন্ত। চিকিৎসকেরা জানালেন, নারায়ণ আচার্যকে সুস্থ করতে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট প্রয়োজন।