সুন্নত নামাজরত অবস্থায় খুন হওয়া আবু হানিফ খানের (৪৩) বাড়িতে গেলেন এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন। শনিবার বিকেলে তার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়ে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এ সময় নিহতের মেয়ে লামিয়া (১২) ভেজা চোখে এমপিকে বলেন, 'কোনো আর্থিক সহযোগিতা চাই না, আমার নিরপরাধ বাবা হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।'
এলাকায় এমপির আগমনে স্থানীয়রা জড়ো হয়। পরে কুড়াখাল সৈয়দ দায়েম উল্লাহ শিশু সদন হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা মাঠে স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, 'এ বর্বর হামলাকারীরা প্রকাশ্যে এ ঘটনা ঘটিয়ে ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে। ঘটনাটি লুকানোর কোনো সুযোগ নেই। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করবেন। আর যাতে কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।'
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, মসজিদে হামলার ঘটনায় একজন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রধান পরিকল্পনাকারী শাহীন ভূঁইয়াকে (৩৫) আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী আফরোজা বেগম (৩২) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বেশ কয়েকজন বলেন, সমাজে আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। গত শুক্রবার জুমার দিন সহসভাপতি হাবিব খানের গ্রুপের কেউ যদি কোন বিষয় নিয়ে কথা বলে তবেই হামলা শুরু হবে। এমন পরিকল্পনা আগে থেকেই নিয়ে রেখেছিল সভাপতি আব্দুল মালেক গ্রুপ। তাই তারা আগে থেকেই মসজিদের মেম্বরের নিচে ও অজুখানায় ধারালো অস্ত্র ও লোহার পাইপ এনে রাখেন।
খুৎবা পড়ার আগ মুহূর্তে ইমাম আজান দিতে বললে মুয়াজ্জিন মসজিদের দরজায় যাওয়া মাত্রই সহসভাপতি হাবিব খান বলে ওঠেন, গত ২৫ বছর ধরে মসজিদের ভেতরে মিম্বরের সামনে আজান দেওয়া হতো। আজ কেন দরজায়? এ কথা বলতেই, সভাপতি আব্দুল মালেক গ্রুপ আচমকা হামলা চালায়।
এতে নিহত আবু হানিফ খানের লাশ কুমেক হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শনিবার বিকেলে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।