কুমিল্লা : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত বোর্ডের প্রধান ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা বলেছেন, অনেকে অনেক সমালোচনা করছেন, মেডিক্যাল বোর্ডকে জিরো বলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমরাই একদিন হিরো হব। কারণ সঠিক পথে আছি আমরা।
সোমবার বিকেলে কুমিল্লা নগরীর বাদুরতলায় ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ডা. কামদা প্রাসাদ সাহা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাকে সপরিবারে হত্যার হুমকি দেয়ার পর নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ফোনে অবহিত করেছি। নিরাপত্তাহীনতায় আমি মানসিকভাবে অস্বস্তিতে আছি। সেজন্য স্বাভাবিক কার্যক্রম করা কঠিন। তবে কাজকর্ম থেমে নেই।
গত ২৪ মে উড়ো চিটি দিয়ে ডা. কামদা প্রসাদ সাহাকে সপরিবারে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আপনি তনু হত্যা মামলা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করছেন, যা আপনার জন্য ভয়াবহ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সহজ মামলাটিকে পেঁচিয়ে জটিল করার চেষ্টা করবেন না।’
তিনি বলেন, আদালত আমাদের ডিএনএ প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত কোনো কাগজ এখনো তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাদের সরবরাহ করেননি।
তনুর বাবার পক্ষে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির দেয়া লিগ্যাল নোটিসের জবাব দেয়া নিয়ে ডা. কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। শিগগিরই পাঠানো হবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিল্লা সিআইডির পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের জানান, ডিএনএ প্রতিবেদন মেডিকেল বোর্ডকে সরবরাহ করতে আদালত আদেশ দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, তনুর ডিএনএ প্রতিবেদনের জন্য ঝুলে থাকা ২য় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। আদালত থেকে ডিএনএ প্রতিবেদন মেডিকেল বোর্ডকে দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে।
কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুস্তাইন বিল্লাহর আদালত থেকে এ সংক্রান্তে একটি আদেশ রোববার রাতে কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে পৌঁছে। সিআইডি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর লাশ গত ২০ মার্চ রোববার কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরেই একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়।
গত ৪ এপ্রিল প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. শারমিন সুলতানা। এতে তনুর মৃত্যুর কারণ বা অনৈতিককাজের আলামত উল্লেখ ছিল না।
আদালতের নির্দেশে ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। সিআইডির ল্যাবে ডিএনএ পরীক্ষার পর তনুর কাপড়ে তিন পুরুষের আলামত পাওয়া যায়।
সিআইডির ডিএনএ রিপোর্টে তিন পুরুষের সেই আলামতের প্রতিবেদনটি পেতে মেডিকেল বোর্ড তৎপর হয়ে ওঠে। এ নিয়ে চলে দফায় দফায় চিঠি চালাচালি।
৩০মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম