মানিকঞ্জ: এবার মানিকঞ্জের দেড় টন ওজনের ষাঁড় গরু লালন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জেলার সাটুরিয়া উপজেলার দেলুয়া গ্রামের পরিষ্কার বিবি এবং তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে ইতি আক্তার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির হাটে ওঠাতে খুব আদর-যত্নে রাজা বাবুকে বড় করেছেন ইতি ও তার মা। এক বছরেই ষাঁড়টির ওজন বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৫৬০ কেজি বা ৩৯ মণ!
জানা যায়, প্রতি বছরই তারা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণ করে লাভবান হয়ে আসছে। তবে এবার তাদের গরু বেশ চমক ফেলে দিয়েছে। ফিজিয়ান জাতের ষাঁড়টিকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে বড় করেছেন মা-মেয়ে।
ইতির মা পরিস্কার বিবি জানান, রাজা বাবুর মাথার ওপরে সব সময়ই ঘোরে বিদ্যুৎ চালিত দু’টি ফ্যান। বিদ্যুৎ না থাকলে নিজেরাই হাতপাখা দিয়ে বাতাস করেন। প্রতিদিন দুপুরে একই সময়ে শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করিয়ে পুরো শরীর মুছে দিতে হয় খুব ভালোভাবে। দিনের বিভিন্ন সময়ে ব্যায়ামও করাতে হয় তাকে।
ঈদের আর বাকি মাত্র কয়েকদিন। বিদায় দিতে হবে আদরের ষাঁড়কে। হাটে তুলা হবে রাজাকে। তাই রাজা বাবুকে নিয়ে এখন অনেক ব্যস্ত ইতি।
গেল বছর কোরবানি ঈদের সময় ২৭ মণ ওজনের একটি ষাঁড় ১০ লাখ টাকা বিক্রি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। অবশ্য ১০-১২ বছর আগে থেকেই পরিষ্কার বিবি এবং তার স্বামী খান্নু মিয়া গরু লালন-পালন করে আসছেন। কিন্তু তার কন্যা ইতি আক্তার দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করা শুরু করেন। আর প্রথম বছরেই লাভবান হওয়ায় এ বছর তিনি আরো বড় আকারের গরু মোটাতাজকরণ শুরু করেন।
এক বছর আগে ঢাকার কেরানিগঞ্জ থেকে দুই বছর বয়সী ফিজিয়ান একটি ষাঁড় গরু কিনে আনেন ইতির বাবা খান্নু মিয়া। সেই থেকে শুরু। ইতি তার মা সাদা ও কালো রংয়ের ষাঁড়টির যত্ন নেয়া শুরু করেন। ইতি সেটির নাম দেয় রাজা বাবু।
রাজা বাবু বল্লেই তাদের ডাকে সাড়া দেয় ষাঁড়টি। প্রতিদিন খাবার খাওয়ানো শুরু করেন মিষ্টি লাউ, দেশি লাউ, শবরি ও বিচি কলা, ছোলা, বোট, কুড়া, ভূষি, খর ও কাঁচা ঘাষ। মাঝে মধ্যে আঙুর, মালটা ও তেুঁতল খাওয়ানো বাদ যায় না।
এ ব্যাপারে ইতি আক্তার জানান, কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে এ রাজাবাবুকে লালন করেছি। রাজা বাবু মাঝে মাঝে রেগে যায়, তখন ঠাণ্ডা পানি ছিটিয়ে দিয়ে শবরি কলা সমানে ধরলেই সব ঠিক হয়ে যায়। তবে এ ষাঁড়টি এমনিতে খুব ঠাণ্ডা প্রকৃতির।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস