মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৭, ১১:২৩:৫৯

রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করা মাদ্রাসা শিক্ষককে খুঁজছে পুলিশ

রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করা মাদ্রাসা শিক্ষককে খুঁজছে পুলিশ

মানিকগঞ্জ : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা নির্যাতন ও গণহত্যার হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বাংলাদেশিদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।

তবে, ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এক রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করেছেন এক যুবক। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার চারিগ্রামের শোয়াইব হোসেন জুয়েল (২৫) নামের ওই যুবককে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ।
 
রোববার বার্তা সংস্থা ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৫ আগস্ট রাখাইন প্রদেশে জাতিগত নিধন শুরু হওয়ার পর পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। চারিগ্রামের শোয়াইব হোসেন জুয়েল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন।

তিনি যে রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করেছেন, সম্প্রতি রাখাইনে নতুন করে অভিযান শুরুর পর পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ওই নারীও একজন। ওই রোহিঙ্গা নারীর নাম রাফিজা (১৮)। জুয়েল ও রাফিজার বিয়ে সম্পন্ন হয় গত সেপ্টেম্বর মাসে। বিয়ের ঘটনা জানাজানি হলেই বর জুয়েল ও নববধূ রাফিজা পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
 
এলাকাবাসী জানান, রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রাফিজার পরিবার মানিকগঞ্জের চারিগ্রামের এক ধর্মীয় নেতার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ওই সময়েই রাফিজা ও জুয়েলের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের বাইরে অবস্থানের বিষয়ে পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে কিছুদিন আগে রাফিজার পরিবারকে মানিকগঞ্জ থেকে ২৬৫ মাইল দূরের কক্সবাজারের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে ফিরে যেতে হয়।

এ সময় জুয়েল কক্সবাজারের এক শরণার্থী শিবির থেকে অন্য শরণার্থী শিবিরে রাফিজাকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ান এবং এক সময় পেয়েও যান তাকে। সে সময় রাফিজার বাবা-মাকে অনুরোধ করেন রাফিজাকে তার সঙ্গে বিয়ে দিতে।
 
এ বিষয়ে সিঙ্গাইর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার ইমাম হোসাইন বলেন, ‘আমরা শুনেছি যে, জুয়েল নামের এক ব্যক্তি মাসখানেক আগে একজন রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করেছেন। তাদের খোঁজে জুয়েলের বাড়ি চারিগ্রামে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে তাদের পাওয়া যায়নি। এমনকি জুয়েলের বাবা-মাও জানেন না তারা কোথায় আছেন? পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে।’
 
রাখাইন হতে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা বিয়ে করে বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, আত্মীয়তার সূত্র ধরে ভোটার তালিকাতেও নাম লেখাচ্ছেন এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এরই পরিপেক্ষিতে ২০১৪ সালের জুলাই মাসে রোহিঙ্গা-বাংলাদেশি বিয়ে বন্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণে বিয়েকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগও আছে।
 
সরকারের আদেশ অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বাংলাদেশিদের বিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদি কোনো কাজী রোহিঙ্গাদের বিবাহ নিবন্ধন করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিয়ে নিবন্ধন হলেও সেটি অবৈধ হবে। কাজী ছাড়াও যারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবেন, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে। তবে গত আগস্টে রোহিঙ্গাদের ঢল শুরুর পর থেকে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশির সঙ্গে রোহিঙ্গা নারীর বিয়ের খবর এলো।

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে