রাজাবাবুর উচ্চতা ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি। ৮ ফুট লম্বা। বুকের মাপ ১২ ফুট। ওজন প্রায় ৫২ মণ। রাজাবাবুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রয়েছে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক। আর নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ। না, রাজাবাবু কোনো কেউকাটা ব্যক্তি নয়। কেবলই একটি ষাড় গরু। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজাবাবুকে সযত্নে লালন পালন করছেন খান্নু মিয়া। তার টার্গেট রাজাবাবুকে বিক্রি করবেন ২০ থেকে ২২ লাখ টাকায়।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দেলুয়া গ্রামে খান্নু মিয়ার বাড়িতে রাজাবাবুকে দেখতে এখন ভিড় লেগেই থাকে। সবারই প্রশ্ন খান্নু মিয়া কি খাইয়ে এতবড় গরু বনালো। খান্নু মিয়ার দাবি কোনো কৃত্তিম পদ্ধতি নয়। একেবারে প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করেছেন তিনি। তিনি জানান, চার বছর আগে ঢাকার কেরানিগঞ্জ হাট থেকে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকায় এই ষাড় গরুটি কিনে আনেন। রাজাবাবুকে চিড়া, গুড়, আপেল, মাল্টা, মিষ্টি লাউ, ভূষি, খড়, সবরি কলা, বিচি কলা ও ছোলা খাবার দেওয়া হয়েছে প্রতিদিন। এতে প্রতিদিন ব্যয় হয়েছে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত রাজাবাবুর পিছনে তার প্রায় ১৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
খান্নু মিয়া জানান, প্রতি বছরই তিনি তিন চারটা করে গুরু লালন পালন করেন। মূলত কোরবানির ঈদে এই গরু বিক্রি করে দেন। এটাই তার আয়রোজগারের অন্যতম একটি পথ। তাই ছোট মেয়ে ইতি আক্তারকে সাভার যুব উন্নয়ন ও সাটুরিয়া প্রাণি সম্পদ বিভাগ থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করণের উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে এনেছেন। রাজাবাবুকে মূলত সেই দেখাশুনা করেছে। এছাড়াও সাটুরিয়া প্রাণী সম্পদ বিভাগ তাকে সব ধরণের সহায়তা করছে জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, লালন পালন করা সব গরুরই তিনি একটি করে নাম দেন। নাম সার্থক হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজাবাবু রাজার মতই হয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের ভেটেরনারি সার্জন ডাঃ মোঃ সেলিম জানান, রাজাবাবু হনস্টেইনি ফ্রিজিয়াম জাতের গরু। সামনের পা থেকে কুজ পর্যন্ত এর উচ্চতা ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি, লেজের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত লম্বায় ৮ ফুট, বুকের মাপ হচ্ছে ১২ ফুট। এ হিসাবে এর ওজন হবে ৫০ থেকে ৫২মণ। কোনো প্রকার হরমন কিম্বা রাসায়নিক দ্রব্যাদি রাজাবাবুকে দেওয়া হয়নি দাবি করে তিনি বলেন প্রাকৃতিক খাদ্য খাওয়ানো হয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, দুই বছর ধরে রাজাবাবুর চিকিৎসার বিষয়টি আমরাই দেখাশুনা করছি। ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মোঃ সেলিম প্রতিদিনই রাজাবাবুর খবর নিয়েছেন।
সাটুরিয়া থানার ওসি মোঃ আমিনুর রহমান রাজাবাবুকে বিশাল উল্লেখ করে বলেন শত্রুতা করে কেও এর ক্ষতি করতে পারে। কিম্বা চুরিও হয়ে যেতে পারে। সে কারণে আমরা রাজাবাবুর প্রতি নজর রাখছি। বিশেষ করে রাতে টহল পার্টিকে সতর্ক রাখা হয়।