নিউজ ডেস্ক: ছবির এই প্রবীণ মানুষটির নাম হাজেরা বেগম। বয়স ৭০। বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের পারিল গ্রামে। জন্ম থেকে শারীরিক বিকলাঙ্গ হলেও কিশোরী বয়সে স্বামীর সংসারের হাল ধরেছিলেন তিনি। একমাত্র কন্যা সেও মায়ের মতো শারীরিক বিকলাঙ্গ। স্বাভাবিক ভাবে চলতে অক্ষম হওয়ায় উপায় না পেয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
বয়সের ভারে নুয়ে পড়া হাজেরা বেগম সোজা হয়ে হাঁটতে পারেন না। হামাগুড়ি দিয়ে হাঁটেন। স্বামী মারা গিয়েছেন ৩০ বছর আগে। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তার কষ্টের জীবন শুরু হয়। সম্পত্তি ও স্বামীর ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে স্বামীর স্বজনরা। নিরুপায় হয়ে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন বোনের বাড়িতে। কিন্তু সেখানেও বেশি দিন থাকা হয়নি তার।
ভিক্ষা ও বিভিন্ন দিক থেকে যে আর্থিক সাহায্য পান তার প্রায় সবই বোন ও বোনের ছেলেরা নিয়ে নিতেন। পরে একপর্যায়ে টাকার জন্য তাকে ফেলে রেখে যায় পারিলের হযরত গাজীউল মূলক ইকরাম ইব্রাহিম বোগদাদী শাহ (রহঃ) এর মাজারে।
মাজারে আসা লোকজন এবং মাজারের আশেপাশে লোকজন যা খেতে দেয় তাই খেয়ে এখন বেঁচে আছেন তিনি। শারীরিক বিকলাঙ্গতার কারণে গোসলও করা হয় না তার। মশা মাছির কামড়সহ নানা অসুখ বিসুখ তাকে ঘিরে ধরেছে। জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পাওয়ায় মাঝে মধ্যেই বিছানায় মল-মূত্র ত্যাগ করেন। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া হাজেরা বেগম চলতে অক্ষম। হাটে-বাজারে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘোরেন প্রয়োজনীয় খাবার ও অর্থের জন্য। চোখের পানি ফেলে আকুতি মিনতি করেন একটু আশ্রয়ের জন্য।
আমার-আপনার-আমাদের একটু ভালোবাসা আর একটু সহযোগিতায় পারে পরিবারহীন অসহায় অসুস্থ হাজেরা বেগমের জীবনের শেষ দিনগুলোকে একটু আরামদায়ক করতে।