নিউজ ডেস্ক: ঈদের আনন্দ মানুষের মনে মনে। আর ঈদকে সামনে রেখেই দোকানে বিক্রি হচ্ছে হরেক রংয়ের বাহারি পোশাক। এই ঈদের বেচাকেনার ভীরে হঠাৎ চোখে পড়লো একটি ব্যতিক্রম চিত্র। দোকানে ঘুরে ঘুরে হাতপাখা বিক্রি করছে হাসান নামের এক কিশোর। পড়নে একটি হাফ-প্যান্ট আর হাফ-হাতা জামা।
আজ বুধবার মানিকগঞ্জের ঘিওরে সাপ্তাহিক হাটবার। অনেকেই ঈদের জামা-কাপড় কিনতে এসেছে। হাসানও এসেছে ঈদের জামা কিনতে। তবে মায়ের তৈরী হাতপাখা বিক্রি করেই ঈদের জামা কিনতে এসেছে সে।
ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের জাবরা নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক কুদ্দুস মিয়ার ছেলে হাসান। বাবা কৃষক, মা গৃহিণী। বানিয়াজুরী থেকে ঘিওর হাট প্রায় ৭ কি.মি দূরে। পকেটে গাড়িভাড়া নাই। তাই পায়ে হেটে মাত্র ৮০০ টাকার জন্য পাখা বিক্রি করতে এসেছে ঘিওর হাটে। ঈদ আনন্দের ইচ্ছে পূরণে বুকভরা আশা নিয়ে এসেছে হাটে।
হাসান জানায়, ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে সে। মায়ের হাতের তৈরী হাতপাখা বিক্রি করে জামা কিনবে এবার ঈদে। হাসানের সাথে কথা বলতে বলতে এমন সময় সেখানে এলেন তার বাবা কুদ্দুস।
কৃষক কুদ্দুস জানায়, ছোট মানুষ খুব বায়না ধরেছে এবারের ঈদে নতুন জামাকাপড় কিনে দিতেই হবে। আর কোন জামাকাপড় না থাকায় এক কাপড়েই চলে এসেছে। অভাবের সংসারে নুন আনতেই পানতা ফুরায়। ঈদে জামা কিনতে চেয়েছিল। টাকাপয়সা পামু কনে। তাই বায়না মিটাতে ওর মা কিছু হাতপাখা বানিয়ে দিয়েছে। হাসি মুখে বাড়ি থেকে দৌঁড়ে বেরিয়ে এসেছে। হাতপাখা বিক্রি হলে সেই টাকা দিয়ে ঈদের নতুন জামা কিনবে। জামা কেনার টাকা না হলে প্রতিবারের মতো এবারের ঈদেও পুরান জামা পড়েই ঈদ করবে।এসব কথা বলতে বলতে কুদ্দুস ছেলে হাসানের মাথায় হাত বুলাতে থাকে।