এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ২২ কোটি টাকার ইনজেকশন নেওয়া সেই রাইয়ান এখন কেমন আছে? বিরল নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফিতে (এসএমএ) আক্রান্ত সেই রাইয়ান এখন অনেকটা সুস্থ। নড়াচড়া করতে পারছে তার শরীর।
গত ২৫ অক্টোবর রাইয়ানকে থেরাপির এই ইনজেকশন দেয়া হয়। এর প্রায় এক মাস পর গত ২১ নভেম্বর নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ফলোআপের জন্য আবারও আনা হয় তাকে।
রাইয়ানকে সরাসরি তত্ত্বাবধান করছেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ডা. জোবাইদা পারভীন। তিনি বলেন, রাইয়ানের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। ও আগে হাত নাড়াতে পারলেও মাথার উপর নিতে পারত না। এখন মাথার ওপরে হাত তুলতে পারছে। ও আগে শোয়া অবস্থায় কাত হতে পারত না, এখন পারছে।
তিনি বলেন, রাইয়ানের বাড়ি মানিকগঞ্জ। বাড়ি অনেক দূরে হওয়ায় প্রতি সপ্তাহে রাইয়ানের মায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তার মাকে ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি শিখিয়ে দেয়া হয়েছে। তার মা বাড়িতে বসেই এসব থেরাপি দিচ্ছেন।
তবে রাইয়ানের পরিপূর্ণ সুস্থ হতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দেয়া হলে আস্তে আস্তে রাইয়ান হাঁটতে শিখবে বলে প্রত্যাশা এ চিকিৎসকের। দেশে প্রথমবারের মতো ‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি’ (এসএমএ) রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়েছিল জিন থেরাপি। রাইয়ানই প্রথম কোনো রোগী যাকে এই চিকিৎসা দেয়া হয়।
রাইয়ানকে যে ওষুধ দেয়া হয়েছে তার প্রতি ডোজের দাম প্রায় ২২ কোটি টাকা। যা বিনামূল্যে দিয়েছে বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নোভার্টিস। এই জিন থেরাপি ইউএসএফডিএ (ইউনাইটেড স্টেটস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) অনুমোদিত।
প্রসঙ্গত, স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি একটি বিরল ও জটিল স্নায়ুতন্ত্রের জন্মগত রোগ, যা জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত শিশুর ঘাড় শক্ত হয় না। তারা বসতে পারে না। তবে কথা বলতে পারে, যোগাযোগ করতে পারে কারণ বুদ্ধি স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু শরীরের নড়াচড়া কম থাকে, ঘন ঘন শ্বাসকষ্ট হয়। শ্বাসকষ্টের কারণে শ্বাসের জন্য যে মাংসপেশি তা দুর্বল হয়ে যায় এবং একপর্যায়ে মারা যায় এ রোগে আক্রান্ত শিশু।