এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : মাত্র ১০৬ দিনে (৩ মাস ১৫ দিন) পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছেন হাসানাত রহমান হিমেল (১৪) নামে এক কিশোর। এত অল্প সময়ে কোরআন শরীফ মুখস্ত করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সে।
হাফেজ হাসানাত রহমান হিমেল পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান হাবিবের ছেলে। সে উপজেলার জয়নগর দারুল উলুম কওমিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার হিফজ বিভাগের ছাত্র।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, হিমেল মাত্র ১০৬ দিনে পুরো কোরআন শরিফ হিফজ করে বিরল কৃতীত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। সে এতোটাই মেধাবী যে নাজেরা পড়া শেষ করে শুরুর দিকে ২ পৃষ্ঠা করে কোরআন মুখস্থ করতে থাকে।
পরে সে ৭/৮ পৃষ্ঠা করে মুখস্থ করা শুরু করে। এভাবে সে অল্প দিনে পুরো কোরআন মুখস্থ করে ফেলে। এখন সে সকালে আধা পারা (১০ পৃষ্ঠা), বিকেলে আধা পারা করে মোট ১ পারা করে কোরআন শুনাচ্ছে তার শিক্ষককে।
হিমেলের বাবা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমার ছেলে অল্প দিনে কোরআনের হাফেজ হয়েছে। ছেলেকে হাফেজ বানানোর স্বপ্ন ছিল, আজকে সেটি পূরণ হলো।
এটি আমাদের পরিবারের জন্য বড় পাওয়া। এ জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে হিমেলের জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন তিনি।
নিজের অনুভূতি জানিয়ে হাফেজ হাসানাত রহমান হিমেল বলে, মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমি ১০৬ দিনে কোরআনের হাফেজ হয়েছি। মাত্র কয়েকবার পড়লেই এক পৃষ্ঠা মুখস্থ হয়ে যায়।
সঠিক নিয়মে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আমাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এখন বিজ্ঞ আলেম হয়ে ইসলাম ও দেশের খেদমতে কাজ করতে চাই। আমি সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।
মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি মো. মজিবর রহমান মোল্লা বলেন, অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সমন্বয়ে এ মাদরাসায় আন্তরিকতার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয়।
শিক্ষকরা ছাত্রদের ঠিকমতো পড়াশোনা করায় কিনা সেটি তদারকি করা হয়। ম্যানেজিং কিমিটি সব কিছুই দেখভাল করে। মাদ্রাসার উন্নয়নে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মো. মিজানুর রহমান বলেন, হিমেল এখানে ভর্তির শুরু থেকেই রাত জেগে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে আসছে। সে প্রতিদিন ৯-১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করে।
বাড়িতে গিয়ে বেশি ছুটিও কাটাতো না। হিমেলের এ মেধা আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ঈশ্বরদীবাসী তথা আমরা পাবনাবাসী ধন্য। আমাদের মাদরাসার জন্য বিশাল গর্বের।
পাবনা জেলা ওলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শরিফুল ইসলাম বলেন,পাবনা জেলায় এই প্রথম এত অল্প সময়ে কোরআনের হাফেজ হলেন ঈশ্বরদীর হিমেল।
পবিত্র কোরআনের পাখির সংখ্যা দেশে দিন দিন বেড়ে চলছে। ৩০ পারা কোরআন পুরোটা বুকে ধারণ করা সহজ কাজ নয়। আল্লাহ যাকে চান তাকে হাফেজ হিসেবে কবুল করেন। হিমেলও তেমনি একজন, যাকে আল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি হাফেজ হিসেবে কবুল করেছেন। আল্লাহর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও শুকরিয়া। তার বাবা ও শিক্ষকদের ধন্যবাদ।