পাবনা : আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় গোলাগুলি, ব্যাংক রোস্তরাঁয় হামলা ও বোমা বিস্ফোরণে যেন কেঁপে উঠে ঈশ্বরদী। গোটা পৌর এলাকা ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
রোববার বিকেলে ঈশ্বরদী রেল বাজারের ১ নম্বর গেটে এ সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ অর্ধশতাধিক রাউন্ড শটগানের ফাঁকাগুলি ছোড়ে।
পূর্ব বিরোধের জের ধরে ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মিন্টু এবং পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র ভূমি মন্ত্রীর জামাতা আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর সমর্থকদের মধ্যে এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।
এসময় অর্ধশতাধিক রাউন্ড বন্দুকের গুলি ও বোমা বিস্ফোরণ, একটি ব্যাংক ও রেস্তোরাঁসহ কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে আভ্যন্তরীণ কোন্দল বিরাজ করছিল। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর আশির্বাদপুষ্ট, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মিন্টু এবং অপর গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন মন্ত্রীর জামাতা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু।
এ বিরোধের কারণেই গত ১৪ জুলাই দুটি গ্রুপই পৃথক পৃথকভাবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। মিছিল ও সমাবেশ শেষে উভয় গ্রুপ জড়িয়ে পড়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে।
ওই ঘটনায় শুক্রবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টু গ্রুপের পক্ষ থেকে আকাল সরদার নামের এক কর্মী বাদী হয়ে ৩০ জনকে আসামি করে ঈশ্বরদী থানায় মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তারকৃত কর্মীদের মুক্তির দাবিতে রোববার সকালে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ওরফে জামাই মিন্টুর সমর্থকরা উপজেলা সম্পাদক মিন্টুকে দোষারোপ করে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সম্মেলনের পর পরই ঈশ্বরদী পৌর এলাকায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে আবারো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এরই জের ধরে বিকেল ৪টার দিকে ঈশ্বরদী রেল বাজারের ১ নম্বর গেটে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও পরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সংঘর্ষে ব্যাপক গোলাগুলি, বোমা বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় ঈশ্বরদী প্রাইম ব্যাংকের ঈশ্বরদী শাখা, প্রগতি রেস্তোরাঁসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়।
ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করে জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অর্ধশতাধিক রাউন্ড শটগানের ফাঁকাগুলি ছোড়ে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিমান কুমার দাস জানান, আওয়ামী লীগের উভয় গ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩০ থেকে ৪০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
১৭ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম