রাজবাড়ী: প্রবাসী স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্থানীয় যুবকের সাথে অবৈধ সম্পর্ক। আর তা দেখে ফেলায় শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা। এরপর আইনের চোখকে ফাঁকি দেয়ার জন্য নিজের শরীরে ধারালো ছোরার আঘাত।
গত ১৬ আগস্ট এমন ঘটনা ঘটেছিল রাজবাড়ী জেলা সদরের বারবাকপুর গ্রামে। পুত্রবধূ স্বপ্না বেগম (২৫) ও পরকীয়া প্রেমিক সোহেল মিয়ার (৩৩) নৃশংসতার শিকার হতে হয় শাশুড়ি হাজেরা বেগমকে (৪৮)। এতদিনে জানা গেল হত্যাকান্ডের আসল রহস্য।
একের পর এক মিথ্যে বলে পুলিশের নজর এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলো স্বপ্না বেগম। কিন্তু ডিবি পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি আর অভিযানে আটক হয় ঘটনার প্রধান আসামি জেলা সদরের কোমড়পাড়া গ্রামের হোসেন মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (৩৩)। এরপর ধরা পড়ে সোহেলের সহযোগী আহলাদীপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে কবির হোসেন (৩২)। তাদের দেয়া তথ্য মতে গৃহবধূ স্বপ্নাকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে চলতি বছরের আগস্ট মাসের ১৬ তারিখে জেলা সদরের বারবাকপুর গ্রামের আলোচিত হাজেরা বেগম হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেন পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি।
এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওসি কামাল হোসেন ভূইয়া জানান, আটক স্বপ্নার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী অনুসারে ঘটনার দিন (গত ১৬ আগস্ট) রাতে ছেলের বৌ স্বপ্নাকে নিয়ে একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন হাজেরা বেগম। সেদিন রাতে স্বপ্নার পরকীয়া প্রেমিক সোহেল স্বপ্নার ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় হাজেরা বেগম টর্চ লাইট দিয়ে সোহেলকে দেখে চিনে ফেলে। পরে সোহেল বাইরে পাহারায় দাঁড়িয়ে থাকা কবিরকে ডেকে নেয় ঘরের ভিতর।
কবির হাজেরা বেগমের হাতে জখম করে। পরে কবির হাজেরা বেগমের দুই পা ও স্বপ্না দুই হাত চেপে ধরলে সোহেল হাজেরার বুকের উপরে বসে গলা কেটে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় যেন স্বপ্নাকে কেউ সন্দেহ না করে তাই সোহেল স্বপ্নার দুই হাতে জখমের চিহ্ন একে দেয়। পরে সোহেল ও কবির পালিয়ে গেলে স্বপ্নার অভিনীত চিৎকারে ছুটে আসে এলাকাবাসী।
ঘটনার পর ডিবি পুলিশ সোহেলকে শনাক্ত করে খুঁজতে থাকে। প্রায় মাস খানেক পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদারীপুর জেলা থেকে সোহেলকে আটক করা হয়। পরে জেলা সদরের আহলাদীপুর এলাকা থেকে সোহেলের সহযোগী কবিরকে আটক করা হয়। এই দু’জনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গতকাল রোববার স্বপ্নাকে গ্রেফতার করা হয়।