রাজবাড়ী: রাজবাড়ীর এক প্রত্যন্ত অঞ্চল সুলতানপুরে নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব পরিবারের এক মেয়ের বিয়ের দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ঐ মেয়েটির বিয়েতে সব খরচ বহন করেছে সংগঠনটির কয়েকজন নেতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি শেখ স্বাধীন শাহেদ বিয়ের সম্পুর্ণ খচর বহন করেন। তার সঙ্গে স্থানীয় আরো কয়েকজন নেতাও রয়েছেন।
রাজবাড়ি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল সুলতানপুরে নদী ভাঙনে নিঃস্ব মোচেন শেখ। পূর্বপুরুষের ভীটেমাটি সব কেড়ে নিয়েছে পদ্মা। তিনিসহ আরো কয়েকটি পরিবার ফরিদপুরের হাজিগঞ্জ ছেড়ে বাড়ি তৈরী করেন রাজবাড়ীর সুলতানপুরে।
জানা যায়, মোচেন শেখ কৃষি কাজ করেন কিন্তু জীবন বদলানোর যুদ্ধে চার লাখ টাকা দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান সম্প্রতি। কিন্তু ভাগ্য সহায় না হওয়ায় দেশে ফিরতে হয়েছে তাকে। দেশে ফেরার পর একমাত্র কন্যা মুর্শিদার বিয়ে ঠিক হলেও অর্থাভাবে পড়েন তিনি।
একই গ্রামের ইয়াকুব মৃধা ও আক্কাস শেখ বিয়ের প্রাথমিক খরচ বহন করেন। কিন্তু বিয়ের দিনের বরযাত্রী আসা ও খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন মোচেন শেখ। এ বিষয়ে খবর পেয়ে এগিয়ে আসেন ছাত্রলীগের কয়েকজন। বিয়েতে সব খরচ বহন করে গতকাল বৃহস্পতিবার মেয়েটির বিয়ে সম্পন্ন করেছেন তারা।
বিয়েতে খরচে এগিয়ে আসা শেখ স্বাধীন শাহেদ বৃহস্পতিবার রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘টাকার অভাবে একজন বাবা মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেন না এর চেয়ে কষ্টের কথা হতেই পারে না। খবরটি শুনেই আমরা ছুটে যাই। খোঁজ খবর নিয়ে বিয়েতে সম্পূর্ণ খরচ বহন করার সিদ্ধান্ত নিই। অবশেষে সব খরচ সম্পন্ন করে মেয়েটির বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসাবে একটা ভালো কাজে স্বাক্ষী হতে পারলাম।’
মেয়েটির পিতা মোচেন শেখ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ রকম সাহায্য কখনোই ভুলার মতো না। আমি মেয়ের বিয়ে দিতে খরচ মেটাতে পারছিলাম না তারা এগিয়ে এসে সাহায্য করলো। তখন আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।’
তিনি জানান, কৃষিকাজ করেই আমাদের সংসার চলে। চার লাখ টাকা দিয়ে বিদেশ গিয়েছিলাম। কিন্তু সেই টাকা জলেই গেছে। সৌদি আরবে একবছর থাকার পর চলে আসতে হয়েছে। ভিটেমাটিও পদ্মায় নেমে গেছে। একদম নি:স্ব অবস্থার মধ্যে পড়েছি। কিন্তু এই অবস্থায় ছাত্রলীগের এগিয়ে আসা আমার জন্য বড় উপকার হয়েছে। আল্লাহ তাদের ভালো করুক।’