মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০, ০৭:০৬:২২

ভবিষ্যতে আর কখনো কোনো যৌ'নকর্মীর জানাজা পড়াবো না : দৌলতদিয়ার ইমাম

ভবিষ্যতে আর কখনো কোনো যৌ'নকর্মীর জানাজা পড়াবো না : দৌলতদিয়ার ইমাম

তাফসীর বাবু, রাজবাড়ী থেকে : এমাসের গোড়ার দিকে প্রথা ভেঙে দৌলতদিয়ার একজন যৌ'নকর্মীর জানাজা পড়িয়ে আলো'চনার কেন্দ্রে এসেছিলেন যে মসজিদের ইমাম, তিনি বলছেন, তিনি ভবিষ্যতে আর কখনো কোনো যৌনকর্মীর জানাজা পড়াবেন না।

দৌলতদিয়া রেলস্টেশন মসজিদের ইমাম গোলাম মোস্তফা বলছেন, 'হামিদা বেগমের জানাজা পড়ানোর পর তিনি স্থানীয়ভাবে সমালো'চনার মুখে পড়েছেন।' যদিও যৌ'নকর্মীদের জানাজা বা দাফনের ব্যাপারে কোন ধর্মীয় বি'ধিনিষে'ধ আছে কি না, তেমন কিছু উল্লেখ করছেন না গোলাম মোস্তফা, কিন্তু বলছেন, তিনি এই জানাজা পড়াতে রাজি ছিলেন না, স্থানীয় পুলিশের কর্মকর্তাদের অনুরোধে তিনি পড়িয়েছিলেন।

ইমাম গোলাম মোস্তফা বলছেন, "এইখানে তো সমালো'চনা হচ্ছে। গ্রামের লোক, দোকানদার সবাই আমার সমালো'চনা করছে। এতোদিন জানাজা হয় নাই, আমি কেন হঠাৎ করে জানাজা পড়াইলাম? ভবিষ্যতে আর জানাজা পড়ানোর নিয়ত নাই। বিভিন্ন আলেমের সঙ্গেও কথা বলছি। তারাও নিষে'ধ করছে। পল্লীর লোকেরা অন্য কাউকে দিয়ে জানাজা, দাফন করাইতে পারে। কিন্তু আমাকে পাবে না।"

প্রথা ভে'ঙে যৌ'নকর্মীর জানাজা এবং ধর্মীয় রীতিতে দা'ফনের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর এই ঘটনাটি যৌ'নপল্লীর বাসিন্দাদের জীবনে কী প্র'ভা'ব ফেলেছে তা দেখতে দৌলদিয়া গিয়েছিলাম আমি। সেখানে গিয়েই জানতে পারলাম ইমাম গোলাম মোস্তফার সামাজিকভাবে নি'গ্র'হ হবার খবর।

বাংলাদেশে যৌ'নপেশা বৈ'ধ হলেও এই পেশাজীবীদের খা'রা'প চোখে দেখা হয়, সমাজ থেকে তারা একরকম বি'চ্ছি'ন্নও থাকেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের প্রথা ভে'ঙ্গে একজন যৌ'নক'র্মীর জানাজার ঘটনা তাদের প্রতি সামাজিক দৃ'ষ্টিভ'ঙ্গি বদ'লাতে কতটা কাজ করবে? বাস্তবে খোঁ'জ নিতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এর উল্টো মনোভাবই দেখা গেলো।

যৌ'নপল্লীর পাশেই দৌলতদিয়া রেল স্টেশন। সেখানেই স্টেশন মসজিদের কাছে কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। এর মধ্যে হামিদুল ইসলাম নামে একজন জানালেন, যৌ'নক'র্মীর পেশাটাই যেখানে ধর্ম সমর্থন করে না সেখানে সারাজীবন সেই পেশায় থেকে শেষ সময়ে ধর্মের দরকার কী?

মনির হোসেন নামে আরেকজন বেশ ক্ষি'প্ত। তার ক্ষো'ভ ইমাম সাহেব কেন জানাজা পড়ালেন সেটা নিয়ে। তিনি বলছেন, "হুজুর তো আগে আমাদের সমাজ থেকেই মত গঠন করবে। জানাজায় নেয়া যাবে কি-না, সেইটা তো গ্রামের লোক বসে পদ্ধতি ঠিক করবে। তারপরে সে আমাদের মর্জি নিয়ে সেখানে যাবে। তাকে তো ইমামের দায়িত্বে রাখছি আমরা। সে একা-একাই কেন গেলো?" সূত্র : বিবিসি বাংলা

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে