আসলাম-উদ-দৌলা : বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ১৯৯৯ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম লংমার্চ ও রাজশাহী বিভাগে সর্ববৃহৎ মহাসমাবেশ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সবার নজর কাড়েন মিজানুর রহমান মিনু। সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ রাজশাহী শাখার আহ্বায়ক ছিলেন। জাগো ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও মহানগর শাখার সভাপতি ছিলেন। জেলা যুবদলের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বৈরশাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে প্রথম ছাত্রনেতা হিসেবে কারাভোগ করেন তিনি।
ওয়ান-ইলেভেন ও শেখ হাসিনার সরকারের আমলে ৭ বার সাড়ে চার বছর কারাবরণ করেন। আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির প্রস্তুতি সম্পর্কে মিনু বলেন, বিএনপি উদার গণতান্ত্রিক দল, নির্বাচনমুখী দল। প্রকৃত নির্বাচনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। অতীতের সবকটি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়েছে। গত নির্বাচনে অংশ নেয়নি। কারণ সরকার একতরফা নির্বাচনের নামে প্রহসনের মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে চেয়েছে। প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় একাধিক যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী রয়েছেন। যারা সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন ও জনপ্রিয়। যে দল ৫ বার রাষ্ট্রক্ষমতায়। দেশ পরিচালনায় অভিজ্ঞ। দু’বার বিরোধী দলে ছিল। সরকারকে বারবার বুঝিয়েছে সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীন সর্বজনীন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। এই দাবি নিয়ে ১৭ কোটি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে আছি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, বৃহত্তর রাজশাহীর ১৯টি আসনে ’৭৯, ’৯১, ’৯৬ এবং ২০০১ সালে আমরা নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিত করেছি। রাজশাহী বিএনপির দুর্গ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সিটি করপোরেশনে আমি তিনবারের মেয়র ছিলাম। বর্তমান মেয়রও বিএনপির, বিপুল ভোটের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত। স্থানীয় নির্বাচনে অধিকাংশ স্থানে আমরাই বিজয়ী হয়ে এসেছি। সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। দিনদিন আমাদের প্রতি জনসমর্থন বেড়েছে।
রাজশাহী বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরে মিনু বলেন, ইতিমধ্যে প্রতিটি মহল্লা, ওয়ার্ড, থানা, জেলা এবং আশপাশের অন্যান্য জেলার কমিটি গঠনের জন্য ইউনিয়ন ও থানাপর্যায়ে সম্মেলন করে সবার মতামতের ভিত্তিতে কমিটি সুসংগঠিত করা হয়েছে। যা নির্বাচন এবং আন্দোলনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্র সময় দিলেই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন কমিটির নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ নির্বাচনের জন্য দলকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।
মামলা-হামলায় বিপর্যস্ত দলের নেতারা আগামীতে আন্দোলন-সংগ্রামে কতটুকু ভূমিকা পালন করতে পারবেন সে বিষয়ে মিনু বলেন, এই অঞ্চলের প্রতিটি স্তরে প্রচুর নেতাকর্মী রয়েছেন। যারা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য, সুপ্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে আন্দোলন-সংগ্রামে বৃহত্তর রাজশাহীতে তিনজন শহীদ, শত শত নেতাকর্মী আজ পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, জেলজুলুম সহ্য করেছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। এরপরও আমরা দমে যায়নি। প্রচুর নেতাকর্মী থাকায় এটা সম্ভব হয়েছে। বিএনপি এক নেতানির্ভর দল না। রাজশাহীতে সমপর্যায়ের অনেক নেতা বিদ্যমান। বিএনপি জনগণের দল। জনগণের ওপর নির্ভর করে পরিচালিত হয়।
জাতীয় নির্বাচনের আগে রাসিকের মেয়র নির্বাচনের বিষয়ে মিজানুর রহমান মিনু বলেন, আসলে স্থানীয় নির্বাচনগুলোয় রাজনৈতিক দল ও প্রতীক, প্রার্থীর গুণাবলী, তার প্রতি জনসমর্থন সব বিষয়গুলো ফ্যাক্টর করে। ব্যক্তি কারিশমা, সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতার অনেক বেশি প্রয়োজন পড়ে। সবদিক মিলিয়েই রাজশাহীতে বিএনপি সব সময় এগিয়ে থাকবে। আগামী সংসদ নির্বাচনের ভালো ফলের আশাবাদ ব্যক্ত করে মিজানুর রহমান মিনু বলেন, অতীতের ধারাবাহিকতায় বৃহৎ রাজশাহীতে ’৯৬ ও ২০০১ সালে যে ধরনের বিজয় অর্জন করেছিলাম তার চেয়েও নিরঙ্কুশ বিজয় নিয়ে আসবে রাজশাহী বিএনপি। এমজমিন
১৪ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসবি