এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : রাজশাহীর বাঘায় চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন বৃদ্ধ মীর রুহুল আমিন। তার মৃত্যু নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে পরিবার।
পরিবারের দাবি, ‘মীর রুহুল আমিন (৬০) মানসিক প্রতিবন্ধী, জেদি মানুষ। তার মনে যা চায় তা করেন, কারো কথা শোনেন না। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কোমরের ব্যথায় ভুগছিলেন। পরিবারের ধারণা অসুস্থতার কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন।
জানা গেছে, সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী রেলস্টেশনে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন মীর রুহুল আমিন। তিনি বাউসা ইউনিয়নের মাঝপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনরা বিভিন্ন মন্তব্য করছেন। নিহতের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মন্তব্য করে অনেকেই পোস্ট দেন।
রুহুল আমিনের মৃত্যুর বিষয় নিয়ে বুধবার দুপুরে কথা হয় ছেলে মীর মশিউর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার বাবা মানসিক প্রতিবন্ধী, জেদি মানুষ। ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি, তিনি কারো কথা শোনেন না। মনে যা চায় সেটাই করেন। ঘটনার দিন বাবা আড়ানী স্টেশন বাজারে গিয়েছিলেন পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে। বাজারে গিয়ে তিনি পেঁয়াজ ঢেকে রাখার জন্য পলিথিনও কিনেছিলেন।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বাবার মৃত্যু নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন লেখা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। সেখানে বাবাকে না খেতে দিয়ে ছেলের বৌদের দিয়ে নির্যাতন, মেয়ে বাবাকে দেখে না ইত্যাদি। আসলে প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, বাবা-মায়ের আমরা দুই সন্তান। বড় বোন মৌসুমী আক্তারের ২০ বছর আগে বিয়ে হয়েছে পাবনার ঈশ্বরদীতে। বোন শ্বশুরবাড়িতে থাকে। আর আমি চাকরির সুবাদে স্ত্রী নিয়ে ঢাকায় থাকি। মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব না ছড়িয়ে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরার দাবি জানান তিনি। শুধু বাবা-মা থাকতেন বাড়িতে।
এ বিষয়ে স্থানীয় স্কুল শিক্ষক এনামুল হক বলেন, রুহুল আমিন একজন সহজ সরল মানুষ। কম কথা বলেন। খুবই জেদি মানুষ। তার মৃত্যু নিয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা কথা রটিয়েছে। এটা ঠিক করেনি। প্রকৃত ঘটনা জানতে হবে। তার পর না হয় লিখল। এসব কারণে পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়।
বাউসা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ আলী মলিন বলেন, রুহুল আমিন এলাকায় সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তারা পারিবারিক ভাবে ভালো মানুষ। তার এক ছেলে এক মেয়ে। বিয়ের পরে মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকে। এছাড়া ছেলে চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকে। জানা মতে, সন্তানরা তার বাবা-মাকে দেখেন। এ দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। দীর্ঘদিন থেকে তিনি কোমর ও পা ব্যথায় ভুগছিলেন। যেহেতু বয়স হয়েছে শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। তবে তার বুদ্ধি কম; যাকে বলে প্রতিবন্ধী।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, পারিবারিকভাবে জানা গেছে তিনি কিছু ঋণ নিয়ে পেঁয়াজের আবাদ করেছিলেন। শুনেছি পেঁয়াজে আশানুরূপ ফলন হয়নি। পেঁয়াজে লোকসান হবে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। এছাড়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।