রাজশাহী থেকে : রাজশাহী নগরীর পশ্চিমাঞ্চল হড়গ্রাম পূর্বপাড়ার টুলিপাড়ার বিশাল এলাকাজুড়ে ‘ব্লক রেইড’ দিয়ে শেষ পর্যন্ত কিছুই পায়নি পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল দশটা থেকে শুরু হওয়া এ অভিযান সন্ধ্যা পৌনে সাতটা পর্যন্ত চলে। শেষ পর্যন্ত কোন কিছুই মেলেনি এ অভিযানে।
এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বড় ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড ও জঙ্গী আস্তানার খোঁজে নিয়মিত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরপর পুরো এলাকায় স্বস্তি ফিরে আসে। এর আগে জঙ্গী আস্তানা সন্দেহে অভিযান শুরু করলে সকাল থেকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে।
সন্ধ্যায় পৌনে সাতটায় রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আমির জাফর অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, মূলত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিয়মিত এ অভিযান শুরু করা হয়েছিল। দিনভর ওই এলাকার সন্দেহভাজন বাড়ি ও ভবনে অভিযান চালিয়ে কিছু পাওয়া যায়নি। সন্দেহভাজন কাউকে আটক করাও যায়নি।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম বলেন, নগরীর ওই এলাকায় সকাল থেকে ব্লক রেইড শুরু হয়। এর আগে সোমবার রাত এগারোটার পর থেকে পুরো এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। সকাল থেকেই কোন ঘোষণা ছাড়াই ঘিরে ফেলা হয় এলাকাটি। বড় ধরনের জঙ্গী আস্তানার খোঁজে পুলিশের ব্লক রেইডে শেষ পর্যন্ত কোন কিছুই মেলেনি। দুপুর দুটায় প্রথম পর্যায়ের অভিযান শেষ হলেও দ্বিতীয় দফার অভিযানে নামে পুলিশ। তবে শেষ পর্যন্ত কিছুই উদ্ধার করা যায়নি।
এদিকে, ব্লক রেইড শুরুর পর থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে রাজশাহী মহানগরীর পশ্চিমাঞ্চল এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের হড়গ্রাম পূর্বপাড়া, আলীগঞ্জ, রাণীদীঘি ও টুলটুলিপাড়ায়। স্থানীয় অধিবাসীরা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে সারাদিন। কাউকে এলাকায় ঢুকতে দেয়া হয়নি আবার কাউকে বের হতেও দেয়া হয়নি। এ নিয়ে গোটা এলাকায় ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করলেও শেষ পর্যন্ত অভিযান শেষে সবার মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।
এলাকাবাসী জানায়, সকাল দশটার পর থেকে নগরীর কোর্ট কলেজ, টুলটুলিপাড়া ও হড়গ্রাম পূর্বপাড়ার সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পুলিশের এই অভিযানকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা শুরু হয়। ভয়ে-আতঙ্কে এলাকার বেশিরভাগ বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ ছিল সারাদিন।
যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী মহানগর (আরএমপি) পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম জানান, অভিযানে কাউকেই আটক করা হয়নি। দুপুরে পিবিআই’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অভিযানে পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা থেকে আসা একটি সোয়াট টিম ও কাউন্টার টেররজিম ইউনিটের সদস্যরাও যোগ দেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম বলেন, অভিযানে শুধু আরএমপির চার থানা ও মহানগর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ এবং আরএমপির রিজার্ভ ফোর্স অংশ নিয়েছে। বাইরে থেকে অন্য কোন দল অভিযানে অংশ নেয়নি। তবে এলাকায় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা অবস্থান করছেন।
তিনি জানান, দুপুরে কিছু সময়ের জন্য অভিযানে বিরতি ছিল। এরপর আবার শুরু হয়। এটি আরএমপির নিয়মিত ‘ব্লক রেইড’। এ ধরনের অভিযান সাধারণত রাতে হয়, তবে এবার দিনেই এটি করা হচ্ছে।
এদিকে, এ অভিযানের ফলে সকাল থেকেই ওই এলাকার মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে। স্থানীয় অধিবাসীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। তারা জানান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দিনভর বাড়ি বাড়ি ঢুকে তল্লাশি চালিয়েছে। সন্ধ্যায় ‘ব্লক রেইড’ অভিযান সমাপ্ত হওয়ার পর এলাকায় স্বস্তি ফিরে আসে।
২৫ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসবি