সুব্রত গাইন: র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদায় জানালেন এক শিক্ষার্থী । রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে ওই বিভাগের সিনিয়র কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
এতে করে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ফেসবুকে স্বপ্ন ভঙ্গের কথা উল্লেখ করে স্ট্যাটাস দিয়ে বাড়ি চলে গেছেন বলে জানা যায়। ভুক্তভোগী ফাহাদ বিন ইসমাঈল ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফাহাদ ও তার কয়েকজন বন্ধু বিভাগের শিক্ষক ও কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষার্থীকে নিয়ে ম্যাসেঞ্জারগ্রুপে রসিকতামূলক মন্তব্য করেন। আর এ মন্তব্যের জের ধরে বিভাগের আল-আমিনসহ কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে ফাহাদকে ডেকে নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের মাধ্যমে র্যাগ দেন। র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। পরে ভয়ে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে তার বাঁড়ি নারায়ণগঞ্জে চলে যান।
র্যাগিংয়ে শিকার ফাহাদ বিষয়টি নিয়ে তার ফেসবুক পেজে ইংরেজিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন: ‘‘আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, র্যাগের প্রভাব যেন আর কোন মা-বাবার উপর না পড়ে। আমি নিজের মর্যাদাহানি করতে পারবো, কিন্তু আমার মা-বাবাকে অপমানিত হতে দিব না। তাই আমার স্বপ্নকে ছাড়তে রাজি হলাম। বিদায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।’’
এ বিষয়ে ফাহাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জীবনে বড় স্বপ্ন ছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করবো কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এসে এমন পরিস্থিতিতে পড়বো কখনো ভাবতে পারিনি। বিভাগের আমি নতুন বলে কাউকে চিনতে পারিনি। আমাকে ডেকে নিয়ে বিভাগের সিনিয়ররা শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি পরে আমার আম্মুকে জানালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পরে আমাকে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে দিবে কিনা তাও আমি জানি না। এ নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার জানামতে এরকম কোন কিছু হয়নি। আমি রোববারে বিভাগে গিয়ে এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নিবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, র্যাগের কারণে ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে চলে গেলে তাহলে এটি খুবই অশালীন বিষয়। এ বিষয়ে আমাকে কেউ অভিযোগ করেনি। এছাড়াও ক্যাম্পাসে কোন র্যাগের বিষয় দৃষ্টিগোচর হলে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস