রাজশাহী থেকে : রাজশাহীতে নানা আয়োজনে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উদযাপিত হয়েছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সব বয়সী মানুষ বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে দিনটি উদযাপন করেছেন। তবে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে উৎসবের আবহ দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি।
এ দিন মেয়েরা শাড়ি আর ছেলেরা পাঞ্জাবী পরে ঘুরে বেড়িয়েছেন এখানে-ওখানে। এবার ভালোবাসা দিবসে রক্ত দিয়ে মানুষের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করলেন রাজশাহীর বেশকিছু তরুণ-তরুণী। শুক্রবার রাজশাহী নগরীর বড়কুঠি পদ্মাপাড়ে আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচিতে তারা র'ক্ত দেন।
রাজশাহীর ১৮টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরাম এর আয়োজন করে। সেখানে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় এবং র'ক্তচা'প পরীক্ষারও ব্যবস্থা রাখা হয়। ভালোবাসা দিবসে নগরীর বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই পদ্মার পাড়ে ঘুরতে যাওয়া অনেক তরুণ-তরুণী নিজেদের র'ক্তের গ্রুপ নির্ণয় এবং র'ক্তচা'প পরীক্ষা করেন।
মানুষের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে অনেক দেন রক্ত। 'হাসবে রোগী বাঁচবে প্রাণ' শ্লো'গা'নে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সহযোগিতা করে নিউ সেফ ব্লাড ব্যাংক। কর্মসূচিতে সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের আহ্বায়ক সুমন আজিম ও স্বেচ্ছাসেবক শরিফুল ইসলাম, সুভাষ কুমার, নাজমুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, আঁখি খাতুনসহ অন্য স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত ছিলেন।
বসন্ত বরণ করতে বরাবরের মত এবারও শুক্রবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চারুকলা বিভাগ আয়োজন করে নানা অনুষ্ঠান। উৎসাহ উদ্দীপনায় শিক্ষক-শিক্ষিকা, বন্ধু আর সহপাঠীদের নিয়ে সবাই আনন্দে মেতে ওঠেন সেখানে। দেশসেরা রাজশাহী কলেজ থেকেও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মুহা. হবিবুর রহমান শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন। এতে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। বাদ্য-বাজনার ছন্দে শোভাযাত্রাটি পুরো শহরে যেন জানান দেয় বসন্তের বার্তা। শোভাযাত্রাটি মহানগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার কলেজে গিয়ে শেষ হয়। বসন্তকে বরণ করতে নগরীর বঙ্গবন্ধু কলেজে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে একদিনে এ দুই উৎসব উপলক্ষে সকাল থেকে বিভিন্ন বিনোদন স্পটেও তরুণ-তরণীসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের ঢল নামে। মেয়েদের পরনে দেখা গেছে হলুদ রঙের শাড়ি, খোঁপায় গাঁদা ফুল, আবার কারও কারও খোঁপায় রঙিন ফুলের ব্যান্ড।
ছেলেদের পরনে ছিল হলুদ অথবা সফেদ রঙের পাঞ্জাবি। বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে গিয়ে মোবাইল ফোন দিয়েই অনেককে ফটোসেশন সারতে দেখা গেছে। বন্ধুদের নিয়ে জটলা করে মোবাইলের ক্যামেরায় সেলফি তুলেও তা স্মৃতিব’ন্দি করেছেন অনেকে।
সকাল থেকে রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, জিয়া পার্ক, বড়কুঠি পদ্মাপাড়, টি-বাঁধ, পদ্মা গার্ডেনসহ অন্য বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কেউ বন্ধু-বান্ধবীকে নিয়ে, কেউ প্রিয়তমা, কেউ আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে বিভিন্ন বাহনে ঘুরে বেড়িয়েছেন শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত।